রামনগরে কান পাতলেই শোনা যায় কতটা দাপুটে অখিল গিরি। তিনি রাষ্ট্রপতিকে কুকথা বলতেও কুণ্ঠা বোধ করেন না। আবার মহিলা আধিকারিককে ডাং দিয়ে পেটানোর হুমকি দেন। তিনি বলেছিলেন রেঞ্জারকে আপনার আয়ু বেশি দিন নেই। কার্যত অখিলের অঙ্গুলিহেলনে রেঞ্জারকে যে অন্যত্র বদলি করা হবে তারই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন অখিল গিরি। কিন্তু সেসব কিছু হল না। অখিল গিরির মন্ত্রিত্বই ফুরিয়ে গেল। কঠোরতম ব্যবস্থা নিল তৃণমূল। পদত্যাগ পাঠাতে কার্যত বাধ্য় হলেন অখিল গিরি।
এদিকে মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করার পরেই মন্ত্রী হিসাবে তিনি যে গাড়িটি ব্যবহার করতেন সেটাও ছেড়ে দেন। তিনি। নীল বাতি লাগানো যে গাড়ি তিনি ব্যবহার করতেন তার ভেতর যে ফাইলপত্র ছিল সেগুলি দ্রুত বের করে নেওয়া হয়। এরপর গাড়ি রওনা দেয় কলকাতার দিকে। রাজ্য পরিবহণ দফতরে জমা পড়বে সেই গাড়ি। সোমবারই সরকারি গাড়ির চালক গাড়িটি জমা দিয়ে দেবেন অফিসে।
তবে মন্ত্রিত্ব হারানোর পরেও অবশ্য তা নিয়ে কষ্ট নেই অখিলের। আপাতভাবে অন্তত সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি এমন কিছু প্রকাশ করেননি যাতে বোঝা যায় যে তিনি ভেঙে পড়েছেন।
তবে তিনি বনদফতরের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগেছেন।মূলত বনদফতরের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন তিনি। তবে তিনি তাৎপর্যপূর্ণভাবে মুখ্যমন্ত্রীর বিবেকবান মন্তব্যকেও পরোক্ষে খোঁচা দেন। বনদফতর কেন বিবেকবান হল না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
মন্ত্রিত্ব গিয়েছে। সম্মান গিয়েছে। ক্ষুব্ধ দলের রাজ্য নেতৃত্ব। গোটা রাজ্য জুড়ে অখিল গিরির বিরুদ্ধে সরব অনেকেই। তারপরেও নিজের অবস্থানে অনড় অখিল গিরি। তারপরেও তিনি সরকারি আধিকারিকের কাছে ক্ষমা চাইলেন না। এমনকী ক্ষমা চাওয়া তো দূরের কথা তিনি যে ক্ষমা চাইবেন না এটাও জানিয়ে দেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমে অখিল গিরি বলেন, সরকারি আধিকারিকের কাছে ক্ষমা চাইব না। রেঞ্জ অফিসারের কাছে ক্ষমা চাইব না। আমার কাছে নির্দেশ যখন এসেছে তখন পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেব। মেল করে পাঠিয়ে দেব। সেই সঙ্গেই অখিল গিরি জানিয়ে দেন, মন্ত্রিত্ব ছাড়া আমার কাছে কোনও ব্যাপার নয়।সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, মন্ত্রিত্ব ছাড়ার ব্যাপারে আমি একেবারেই অনুতপ্ত নয়। মন্ত্রিত্ব ছাড়াটা বড় ব্যাপার নয়। গ্রামের মানুষ বলছেন বনদফতরের লোকজন কীভাবে টাকা নিয়ে দোকান বসিয়েছেন সেটা দেখে নিন।