সালটা ছিল ২০০৪। হেতাল পারেখ ধর্ষণ–খুনের মামলায় ফাঁসি হয়েছিল ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের। ফাঁসির আগে গান গেয়েছিলেন ধনঞ্জয়—‘আমার স্বাদ না মিটিল আশা না পুরিল সকলই ফুরায়ে যায় মা।’ বিখ্যাত এই শ্যামা সঙ্গীত আজ আবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল রাজ্য–রাজনীতির ময়দানে। ২০ বছর পর ওই ফাঁসির মামলার পুনর্বিচার চেয়ে ধনঞ্জয়ের গ্রাম বাঁকুড়ায় তৈরি হল মঞ্চ। ওই মঞ্চের সদস্যদের দাবি, ধনঞ্জয় নির্দোষ ছিলেন। তাই ওই মামলা যতদিন না পুনরায় শুরু হচ্ছে, ততদিন তাদের আন্দোলন চলবে। গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে মামলা আবার চালুর দাবিতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছেও দ্বারস্থ হবেন তাঁরা।
আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা যেভাবে মোড় ঘুরেছে তা দেখেই ধনঞ্জয়ের ফাঁসি নিয়ে এবার ফুঁসে উঠেছে বাঁকুড়ার গ্রামবাসীরা। আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন তাঁরা। ওই সময় সাক্ষী দেওয়া একজন বলেছেন তখন মিথ্যে বলেছিলেন। এই কথা শোনা গিয়েছে খোদ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে। তারপরই ১৯৯০ সালের ৫ মার্চ হেতাল পারেখ হত্যাকাণ্ড এবং ২০০৪ সালে ফাঁসি নতুন মোড় নিতে শুরু করেছে। কলকাতায় নিজের আবাসনেই হেতাল পারেখকে ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ ওঠে নিরাপত্তারক্ষীর দায়িত্বে থাকা ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেই। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে এবং ১৪ বছর জেলে থাকার পর আদালতের নির্দেশে ২০০৪ সালের ১৫ অগস্ট ফাঁসি হয় ধনঞ্জয়ের।
আরও পড়ুন: খাস কলকাতায় বিক্রেতার ছুরির আঘাতে আক্রান্ত ক্রেতা, রক্তারক্তি কাণ্ডে গ্রেফতার তিন
তখন গ্রাম কুলুডিহি–সহ ছাতনার মানুষজন দাবি করেছিলেন, ধনঞ্জয় প্রকৃত দোষী নয়। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। বারবার সরবও হয়েছিলেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। এখন আবার আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার একের পর এক বিষয় সামনে আসায় ৩৪ বছর আগের ঘটনাও চর্চায় উঠে আসছে। এবার ধনঞ্জয়ের গ্রামের বাসিন্দাদের উদ্যোগেই মঞ্চ তৈরি হয়েছে। যার নাম—‘ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় মামলা পুনর্বিচার মঞ্চ’। আজ রবিবার ছাতনা বাসুলি মন্দিরে পুজো দিয়ে এই মঞ্চের কর্তাব্যক্তিরা মামলার পুনর্বিচারের দাবিতে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান শুরু করলেন। এই স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান গোটা বাংলাজুড়ে করা হবে। তারপর রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে।