এবার একই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রাজ্য়ের স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর বিরুদ্ধে দুই ধরনের ভিন্ন পন্থা অবলম্বনের অভিযোগ উঠল। যার জেরে কলকাতা হাইকোর্টে নতুন করে আরও একটি মামলা রুজু করা হল।
প্রায় ৬০০ জন 'বঞ্চিত' মামলকারীর বক্তব্য হল, উচ্চ প্রাথমিকের নবম ও দশম শ্রেণি এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি একই সময় প্রকাশ করা হয়েছিল। আবেদনকারীরা দু'টি নিয়োগ প্রক্রিয়াতেই অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং দু'টিতেই কৃতকার্য হয়েছিলেন। অথচ, দুটি ক্ষেত্রে নিয়োগের প্রশ্নে ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম অনুসরণ করা হয়েছে। এসএসসি-র এই আচরণের ফলে পরীক্ষায় পাশ করা সত্ত্বেও প্রায় ৬০০ চাকরিপ্রার্থী বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট এসএসসি-র ২০১৬ সালের প্রায় সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করে দেওয়ায় চাকরি হারান প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী ও অশিক্ষক কর্মচারী। সেই রায় শীর্ষ আদালত বলেছিল, যাঁরা অন্য কোনও রাজ্য সরকারি চাকরি ছেড়ে স্কুলের চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন, এই রায়ে তাঁদের মধ্যে কারও চাকরি গেলে, তাঁরা পুরনো চাকরিতে ফিরে যেতে পারবেন। কিন্তু, তাতে সমস্যা তৈরি হয়েছে।
মামলাকারী অন্বেষা মুখোপাধ্যায়-সহ ৬০০ জনের পক্ষের আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী এই প্রসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টে বলেন, মামলাকারীরা আপার প্রাইমারির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া সত্ত্বেও তাঁদের 'ইন সার্ভিস' দেখিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি। অথচ একই ইস্যুতে যাঁরা নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশে কর্মরত ছিল তাঁদের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিয়ে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবী আরও বলেন, নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশে চাকরি চলে যাওয়ার পর তাঁরা আপার প্রাইমারিতে শিক্ষক হিসাবে কাজে যোগ দিয়েছেন। অথচ একই সূত্রে মামলাকারীদের ২০১৫ সালে বাতিল হওয়া রুল দেখিয়ে, তাঁদেরকে ইন্টারভিউয়ে বসতে দেওয়া হয়নি। এসএসসি-র বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, যাঁরা উচ্চ পদে চাকরি করবেন, তাঁরা আপার প্রাইমারিতে বসতে পারবেন না।
এসএসসি-র এই ভূমিকার সমালোচনা করে মামলাকারীরা বলেন, এসএসসি-র ভুলেই যেহেতু তাঁদের চাকরি গিয়েছে, তাই আপার প্রাইমারির নিয়োগ প্রক্রিয়ার মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া প্রত্যেকের চাকরির ব্যবস্থাও এসএসসি কর্তৃপক্ষকেই করতে হবে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রীষ্মের অবকাশকালীন ছুটির পর দ্রুত এই মামলার শুনানি করা হবে।