দীর্ঘ সময় দিল্লি মসনদে ছিলেন মুঘল সম্রাটরা। এবার নিজেদের মুঘলদের বংশধর বলে দাবি করে সুলতানা বেগম এক মহিলা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। তিনি দাবি করেন, তিনি শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের প্রপৌত্রের বিধবা স্ত্রী। আর সেই সূত্রেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে দাবি করে বসেন, লালকেল্লা তাঁদের। তাই তাঁকে সম্পত্তির অধিকার দেওয়া হোক। যদিও তাঁর মামলা খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
সুলতানা বেগমের আবেদনকে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি পিভি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে। প্রধান বিচারপতি জানান, প্রাথমিকভাবে দাখিল করা রিট পিটিশনটি ভিত্তিহীন। এটি গ্রহণযোগ্য নয়।' এরপরেই সুলতানার আইনজীবী বলেন, আবেদনকারী দেশের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবারের সদস্য।' পাল্টা জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'শুধু লালকেল্লাই কেন চাই? ফতেপুর সিক্রি কেন নয়, সেটাই বা বাদ দেওয়া হল কেন?' এ কথা জানিয়ে মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সেটি খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
আরও পড়ুন-'ভরা রাস্তায় তরুণীর পিঠে আঘাত, ইচ্ছা করে ধাক্কা', বেঙ্গালুরুতে পাকড়াও MBA ডিগ্রিধারী
সুলতানা বেগম পিটিশনে দাবি করেন, ১৮৫৭ সালে প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে ব্রিটিশরা পরিবারকে তাঁদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছিল এবং সম্রাটকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হয়েছিল। এছাড়া লালকেল্লার দখল জোর করে মুঘলদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আরও দাবি করা হয়েছে যে বেগম লালকেল্লার মালিক, কারণ তিনি এটি তাঁর পূর্বপুরুষ বাহাদুর শাহ জাফরের থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। বাহাদুর শাহ জাফর (দ্বিতীয়) ১৮৬২ সালের ১১ নভেম্বর ৮২ বছর বয়সে মারা যান।
পিটিশনে আরও বলা হয়েছে যে আবেদনকারীকে লালকেল্লার অধিকার হস্তান্তর করতে হবে বা পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ১৮৫৭ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত সরকার যে লালকেল্লা দখল করেছে, তার জন্য ক্ষতিপূরণও দাবি করা হয় আবেদনে।
আরও পড়ুন-'ভরা রাস্তায় তরুণীর পিঠে আঘাত, ইচ্ছা করে ধাক্কা', বেঙ্গালুরুতে পাকড়াও MBA ডিগ্রিধারী
সন্ত্রাস এবং বাণিজ্য একসঙ্গে নয়! ভারতের বাজারের পাকিস্তানি পণ্যের প্রবেশ রুখতে হাই অ্যালার্ট জারি
এর আগে লালকেল্লার দাবি জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। প্রথমে সিঙ্গল বেঞ্চে মামলাটি খারিজ হয়ে গিয়েছিল। গত বছরের ডিসেম্বরে দিল্লি হাইকোর্টেও বিচারপতি বিভু বখরু এবং বিচারপতি তুষাররাও গেদেলার বেঞ্চেও মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। সেই সময় সিঙ্গল বেঞ্চে মামলাটি খারিজ হওয়ার পর ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হতে দেরি হওয়ার কারণে মামলাটি খারিজ করে দেওয়া হয়।
ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, 'আড়াই বছরের বেশি সময় পর এই আবেদন করা হয়েছে, যা মেনে নেওয়া যায় না।' বেগম জানান যে তিনি তাঁর অসুস্থতার জন্য এবং তাঁর মেয়ের মৃত্যু হওয়ায় আবেদন জানাতে পারেননি। এই আবেদন অপ্রাসঙ্গিক বলেও উল্লেখ করে আদালত।