'রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে।' ইউক্রেনে ভয়াবহ এয়ারস্ট্রাইক নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবার ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় এয়ারস্ট্রাইক করেছে রাশিয়া।যার জেরে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। নিউ জার্সির মোরিসটাউন বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি পুতিনের কাজে খুশি নই।’
ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প বলেছেন, 'রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আমার সবসময়ই খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু তাঁর সঙ্গে মনে হয় কিছু একটা ঘটেছে। সে একেবারে পাগল হয়ে গেছে। সে অকারণে অনেক মানুষকে হত্যা করছে। আর আমি শুধু সেনাদের কথা বলছি না। ইউক্রেনের শহরগুলিতে কোনও কারণ ছাড়াই ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন নিক্ষেপ করা হচ্ছে। আমি সবসময় বলেছি যে তিনি পুরো ইউক্রেন চান। কেবল এর এক টুকরো নয়, এবং সম্ভবত এটি সঠিক বলে প্রমাণিত হচ্ছে, তবে যদি তিনি তা করেন তবে এটি রাশিয়ার পতনের দিকে পরিচালিত করবে।' এর আগে ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্টের প্রশংসা প্রকাশ করেছেন একাধিকবার। কিন্তু সম্প্রতি কিয়েভের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় মস্কোর অবস্থান নিয়ে ক্রমবর্ধমান হতাশা প্রকাশ করেছেন। ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া এয়ার ফোর্স ওয়ানে ওঠার আগে মরিসটাউন বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, 'পুতিন যা করছেন তাতে আমি খুশি নই। তিনি অনেক মানুষকে হত্যা করছেন, এবং আমি জানি না পুতিনের কী হয়েছে। আমি তাকে অনেক দিন ধরে চিনি। এখন যা করছে আমি তা মোটেও পছন্দ করছি না।'
আরও পড়ুন-ট্রাম্প ‘স্পিড’ কমাতেই চড়চড়িয়ে উঠল সেনসেক্স! চওড়া হাসি বিনিয়োগকারীদের মুখে
শনিবার এবং রবিবার ইউক্রেনের একাধিক শহরে ড্রোন এবং মিসাইল হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। সবমিলিয়ে ৩৬৭টি ড্রোন ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছে বলে খবর, যা গত তিন বছরের যুদ্ধে একদিনের নিরিখে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ড্রোন হামলা। রবিবার এই হামলায় অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কথায়, রুশ ড্রোনের অধিকাংশই নিষ্ক্রিয় করা গিয়েছে। তবে গ্রাম-শহর মিলিয়ে ৩০টি এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রুশ হামলার জেরে। রবিবারের হামলাটি হয়েছে দুই দেশের মধ্যে বন্দি বিনিময় চলাকালীন। এই ঘটনার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আন্তর্জাতিক মহলের প্রতিক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে হতাশা জানিয়েছেন তিনি। জেলেনস্কি বলেন, ‘শনিবার বা রবিবার হোক, দুনিয়া ছুটি কাটাতে পারে, কিন্তু যুদ্ধ চলতেই থাকে। একে উপেক্ষা করা যায় না।যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতা এবং দুনিয়ার চুপ করে থাকা পুতিনকে আরও নৃশংস করে তুলছে। যতক্ষণ না রাশিয়ার উপর কড়া চাপ তৈরি করা হবে, ততক্ষণ এই হামলা থামবে না।’
আরও পড়ুন-ট্রাম্প ‘স্পিড’ কমাতেই চড়চড়িয়ে উঠল সেনসেক্স! চওড়া হাসি বিনিয়োগকারীদের মুখে
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প কিছুদিন আগেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেই কারণে পুতিনের সঙ্গে তিনি দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ফোনে কথা বলেন। জেলেনস্কির সঙ্গেও তিনি যোগাযোগ করেছিলেন। উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে বসানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু সব প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়, কারণ তুরস্কে যে শান্তি আলোচনা হওয়ার কথা ছিল, সেখানে পুতিন যাননি। আন্তর্জাতিক চাপ থাকা সত্ত্বেও রাশিয়া হামলা জারি রেখেছে।