বালোচিস্তানে সেনার বাসে বিস্ফোরণের ঘটনায় ভারতকে দোষী সাব্যস্ত করছে পাকিস্তানি সেনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে অবশ্য কাল্পনিক গল্প ছাড়া কোনও প্রমাণ তারা দিতে পারেনি। আর এদিকে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে পাকিস্তানি সেনার বিরুদ্ধে প্রমাণ তুলে ধরে তোপ দাগল ভারত। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার জবাবে ভারত অপারেশন সিঁদুর পরিচালনা করেছিল। তাতে হাফিজ সইদের ভাই সহ ১০০ জঙ্গির মৃত্যু ঘটেছিল। এই সব জঙ্গিদের শেষকৃত্যে ইউনিফর্ম পরিহিত সেনা আধিকারিকদের দেখা গিয়েছিল। আর তা নিয়েই এবার সরব হল ভারত। নিরাপত্তা পরিষদের এই বৈঠকে পাকিস্তানের 'চরম ভণ্ডামিপূর্ণ' আচরণ তুলে ধরেন রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি পার্বথানেনি হরিশ। এরই সঙ্গে দুই দেশের মধ্যে চারদিনের সামরিক সংঘর্ষের সময় সাধারণ নাগরিকদের ওপর হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। (আরও পড়ুন: 'জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষক ইউনুস… বিপন্ন ভারতের নিরাপত্তা', বিস্ফোরক আওয়ামি লিগের)
আরও পড়ুন: মাঝ আকাশে নাক ভেঙে যাওয়া ইন্ডিগোর বিমানটির নিরাপদ অবতরণে সাহায্য করেছিল বায়ুসেনা
উল্লেখ্য, পাকিস্তান অভিযোগ করে, অপারেশন সিঁদুরে নাকি তাদের দেশের সাধারণ নাগরিক মারা গিয়েছ। এই অভিযোগেরই জবাবে পার্বথানেনি হরিশ বলেন, 'যে দেশ (পাকিস্তান) সন্ত্রাসী ও সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে কোনও পার্থক্য করে না, তাদের সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা রক্ষা নিয়ে কথা বলার কোনও অধিকারই নেই।' এর আগে রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত পাকিস্তানের দূত আসিম ইফতিখার আহমেদ কাশ্মীর ইস্যু টেনে এনে সাম্প্রতিক সামরিক সংঘাত নিয়ে কথা বলেছিলেন এবং ভারতের দিকে আঙুল তুলেছিলেন। (আরও পড়ুন: নিজের সংস্থাকে একের পর এক সুবিধা, নোবেলজয়ী ইউনুস এখন 'ভিলেন' বাংলাদেশে!)
আরও পড়ুন: শ্রীনগরগামী উড়ানের ২ ইন্ডিগো পাইলটকে গ্রাউন্ড করল DGCA, ওদিকে প্রশংসা মন্ত্রীর
এরপরই ভারতের দূত তুলে ধরেন যে কীভাবে দশকের পর দশক ধরে পাকিস্তান সন্ত্রাসের আড়ালে সাধারণ নাগরিকদের নিশানা করে আসছে ভারতে। তিনি বলেন, 'ভারত কয়েক দশক ধরে সীমান্তের ওপারে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়ে আসছে। ২৬/১১ মুম্বই হামলা থেকে শুরু করে ২০২৫ সালের এপ্রিলে পহেলগাঁওয়ে নিরীহ পর্যটকদের বর্বরোচিত গণহত্যা এর মধ্যে রয়েছে। মূলত সাধারণ নাগরিক পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়, কারণ এই সন্ত্রাসবাদের উদ্দেশ্য আমাদের সমৃদ্ধি, অগ্রগতি এবং আমাদের মনোবলের উপর আঘাত হানা।'
এরপর অপারেশন সিঁদুরে নিহত পাক জঙ্গিদের শেষকৃত্যে অংশ নেওয়ার জন্য পাক সেনার সমালোচনা করেন তিনি। হরিশ বলেন, 'আমরা সম্প্রতি দেখেছি অপারেশন সিঁদুরে নিহত কুখ্যাত সন্ত্রাসীদের শেষকৃত্যে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পুলিশ ও সামরিক কর্মকর্তারা শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। যে জাতি সন্ত্রাসী ও সাধারণ নাগরিকের মধ্যে কোনও পার্থক্য করে না, তাদের সাধারণ নাগরিকদের রক্ষার কথা বলার কোনও যোগ্যতা নেই।' হরিশ বলেন, 'পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে গোলাবর্ষণ করে ২০ জনেরও বেশি সাধারণ নাগরিককে হত্যা করেছে এবং ৮০ জনেরও বেশি মানুষকে জখম হয়েছে। এই ধরনের আচরণের পরে তারা যা প্রচার করছে তা ভণ্ডামি। সাধারণ নাগরিকদের সুরক্ষাকে অজুহা করে রাষ্ট্রসংঘ মনোনীত জঙ্গিদের সুরক্ষার পক্ষে সওয়াল করা যায় না।'