বাংলাদেশে নাকি সংখ্যালঘুদের উপর কোনও নির্যাতন হয় না। বরং, অন্য়ান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা অনেক বেশি ভালো আছেন! বাংলাদেশে সংখ্য়ালঘু নির্যাতন হয় বলে যেসব দাবি করা হয়, সেই সবই আসলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ভুয়ো প্রচার - প্রোপাগান্ডা!
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে নিশানা করে এভাবেই সংখ্যালঘু নিপীড়নের যাবতীয় দায়, দায়িত্ব ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলে দিলেন মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা এ এফ এম খালিদ হোসেন।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম অনুসারে - গতকাল (রবিবার - ২১ এপ্রিল, ২০২৫) আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে এই সমস্ত 'বাণী' শুনিয়েছেন খালিদ সাহেব। জানা গিয়েছে, ওই দিন পার্বত্য চট্টগ্রাম ওলামা পরিষদের উদ্যোগে রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ মাঠে জাতীয় সীরাত সম্মেলন উপলক্ষে একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন খালিদ হোসেনও। তাঁকে প্রধান অতিথি হিসাবে সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
এই সভামঞ্চ থেকেই বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন নিয়েও কিছু মন্তব্য করেন খালিদ হোসেন। এবং মহম্মদ ইউনুসের মতো সেই একই পুরোনো বুলি আউড়ে যান তিনি। জানান, ভোট কবে হবে, সেটা নাকি নির্ভর করছে বাংলাদেশের আমজনতার ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ের উপর!
খালিদ হোসেনের যুক্তি, 'জনগণের ইচ্ছা ও অভিপ্রায় যেদিকে জোরালো হবে, সরকার সেদিকে নজর দেবে। তবে সরকার একটি নির্ধারিত রোড ম্যাপ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের জন্য যে রোড ম্যাপ ঘোষণা করেছেন সেই অনুযায়ী নির্বাচন করার জন্য সরকার কাজ করছে।'
যদিও বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই একাধিকবার অভিযোগের সুরে জানিয়েছে যে - কেয়ারটেকার সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনও রোড ম্যাপ দিতে পারেনি!
রবিবারের এই অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সভাপতি মৌলানা মামুনুল হক। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ওলামা পরিষদের সভাপতি মউলানা শরিয়ত উল্লাহ। এছাড়াও প্রশাসনের তরফে উপস্থিত ছিলেন - জেলাশাসক মহম্মদ হাবিবউল্লাহ, জেলা পুলিশসুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন।
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশজুড়ে যে সংখ্য়লঘু নির্যাতন শুরু হয়েছে, সেই অভিযোগ কিন্তু উঠে এসেছে বাংলাদেশেরই সংখ্যালঘু নাগরিকদের পক্ষ থেকে। এমনকী, এই বিষয়ে রীতিমতো পরিসংখ্যান পেশ করা হয়েছে বাংলাদেশি সংখ্যালঘু সংগঠনের তরফে। যদিও ইউনুস প্রশাসন প্রথম থেকেই এগুলিকে পাত্তা দিতে চায়নি। তাদের দাবি, ব্যতিক্রমী ও বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়নের কোনও ব্যাপক পরিস্থিতি তৈরিই হয়নি।