কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বরের বিরুদ্ধে ওঠা সোনা পাচার মামলায় নয়া মোড়। রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে দাবি করেছেন, 'কন্নড় অভিনেত্রী রান্যা রাওয়ের বিয়ের উপহার দিয়েছিলেন পরমেশ্বর। আর এতে কোনও ভুল নেই।' এরপরেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী বলেছেন, এই ঘটনা রাজ্য কংগ্রেসের অভ্যন্তরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের পরিণতি।কংগ্রেস দল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের কাছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। (আরও পড়ুন: সেন্ট মার্টিন, রাখাইন করিডোর জল্পনার মাঝে বাংলাদেশে পা US বাহিনীর! কী বলছে ভারত?)
আরও পড়ুন: 'শুধু বাংলাদেশ কেন, সেভেন সিস্টারেরও বন্দর চট্টগ্রাম', হঠাৎ যেন সুর বদল ঢাকার!
সোনা পাচার কাণ্ডে কন্নড় অভিনেত্রী রান্যা রাওকে গ্রেফতারের পর এই মামলায় নাম জড়ায় কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। এই বিষয়টির তদন্ত করছে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট থেকে ৪০ লক্ষ টাকা ব্যবহার করা হয়েছে রান্যা রাওয়ের ক্রেডিট কার্ডের বিল শোধ করার জন্য। মন্ত্রীর তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তল্লাশি চালিয়েছে চালিয়েছে ইডি। গত পাঁচ বছরের আর্থিক রেকর্ড খতিয়ে দেখা হয়। যদিও মন্ত্রীর দাবি, তিনি সমস্তটাই সহযোগিতা করছেন। (আরও পড়ুন: মাকে তালাক দিয়েছিল বাবা, পাক গুপ্তচর তোফায়েল শরিয়ত চালু করতে চাইত ভারতে)
আরও পড়ুন: ক্ষমতার ভরকেন্দ্র টিকে থাকার শেষ মরিয়া চেষ্টা? বাংলাদেশ সেনাকে বার্তা হাসনাতের
আরও পড়ুন: অপারেশন সিঁদুরে অবদান, সেই মহিলা অফিসারের চাকরির নিশ্চয়তা নেই! বড় নির্দেশ SC-র
এই নিয়ে বিতর্কের মাঝে জি পরমেশ্বরের বাসভবনে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান শিবকুমার। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, 'আমি পরমেশ্বরের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা জনগণের সেবার জন্য আছি, প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করি। মানুষকে আমাদের অনেক উপহার দিতে হয়। ১ টাকা, ১০ টাকা থেকে শুরু করে ১০ লক্ষ টাকা, ৫ লক্ষ টাকা উপহার দিই। আমার মনে হয় তিনিও হয়তো উপহার দিয়েছিলেন। এটি একটি বিয়ে ছিল, আর সেখানে উপহার দেওয়াতে কোনও ভুল নেই।' শিবকুমার আরও জানান, 'রান্যা রাও যে ধরণের কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত, তা কোনও রাজনীতিবিদ সমর্থন করবেন না।তিনি যা করেছেন, তা সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে এর বিচার করবে। আমরা হাজার হাজার মানুষের সাথে দেখা করি, আমরা জানি না কে কী করে। আমরা আইন এবং ইডির কাজে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। আমি তাঁকে এর ব্যাপারে (উপহারের বিষয়ে) জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানিয়েছেন, বিয়েতে তিনি উপহার দিয়েছিলেন।'
এদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী দাবি করেছেন, 'কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ইডির কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।কংগ্রেসের ভেতরের একটা অংশ পরমেশ্বরের বিরুদ্ধে তথ্য পাঠাচ্ছে এবং এখন নাটক করছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা পরমেশ্বরকে সম্মান করি। তিনি একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ। কিন্তু কংগ্রেসের ভেতরেও কিছু লোক আছে যারা অভিযোগ করছে। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া জানেন। তাকে জিজ্ঞাসা করুন। এখন তিনি নাটক করছেন।' তিনি আরও বলেন,'ইডি হাতে তথ্য পেলেই অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে, তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা কংগ্রেস নেতা বলে নয়।'
উল্লেখ্য, গত ৩ মার্চ বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয় রান্যাকে। অভিযোগ, দুবাই থেকে অভিনেত্রী সোনা পাচার করছিলেন। বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর আগে তল্লাশি চালিয়ে অভিনেত্রীর কাছ থেকে ১৪ কেজির সোনার বিস্কুট উদ্ধার করেন গোয়েন্দারা। যার বাজারমূল্য সাড়ে ১২ কোটি টাকা। পরে অভিনেত্রীর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। সেখান থেকে দু’কোটি টাকার সোনার গয়না এবং আড়াই কোটির বেশি নগদ পাওয়া যায়। এর সপক্ষে কোনও যথাযথ রসিদ দেখাতে পারেননি অভিনেত্রী। সোনাপাচার মামলায় ডিআরআই-এর আবেদনের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। পরে এই একই মামলায় তদন্ত শুরু করে ইডিও।যদিও এই মামলায় গত ২০ মে জামিন পান অভিনেত্রী। অর্থনৈতিক অপরাধ সংক্রান্ত বিশেষ আদালত শর্তসাপেক্ষে অভিনেত্রীর জামিন মঞ্জুর করেছে। তবে জামিন পেলেও জেলমুক্তি হয়নি অভিনেত্রীর। তাঁর বিরুদ্ধে বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণ এবং চোরাচালান কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। এর জেরে জেলেই থাকতে হবে তাঁকে।