ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের বৈঠক নিয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের মন্তব্য প্রসঙ্গে বিভিন্ন সূত্র ওই অ্যাকাউন্টকে বিভ্রান্তিকর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উড়িয়ে দিয়েছে। খবর এএনআই সূত্রে।
শনিবার সূত্রের খবর, ইউনুসের সঙ্গে আগের সরকারের সম্পর্ক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্যের ব্যাখ্যাও সঠিক নয়।
সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী মোদী ২০১৪ সাল থেকে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতির কথা বলেছেন এবং একে আমাদের সমাজ ও জনগণের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।
যে কোনও গণতন্ত্রে বৈধতার ভিত্তি হিসাবে নির্বাচনের গুরুত্বের কথাও উল্লেখ করেছেন মোদী।
এ বিষয়ে অব্যাহত গড়িমসি প্রধান উপদেষ্টার সুনাম ক্ষুণ্ন করবে। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাজানো বলে বাংলাদেশি যে দাবি করছে, তা বাস্তব তথ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার উত্থাপিত বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁকে বলেন, বিদেশমন্ত্রীরা এই বিষয়ে সবচেয়ে ভাল আলোচনা করেন।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ আবেদনের বিষয়ে প্রেস সচিবের পর্যবেক্ষণের কোনো ভিত্তি নেই।
সূত্রগুলি জোর দিয়েছে যে এই জাতীয় প্রচেষ্টা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গুরুত্ব এবং সরল বিশ্বাস উভয়কেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বক্তব্য তুলে ধরেন।
শুক্রবার ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদী।
গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের প্রতি ভারতের সমর্থনের কথা পুনরায় ব্যক্ত করেন মোদী।
সম্পর্কের প্রতি ভারতের জন-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দু'দেশের মধ্যে সহযোগিতা দু'দেশের জনসাধারণের জন্য বাস্তব সুফল এনে দিয়েছে। তিনি বাস্তববাদের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে ভারতের আকাঙ্ক্ষার কথা উল্লেখ করেন।
পরিবেশকে কলুষিত করে এমন বাগাড়ম্বর এড়ানোর আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। সীমান্তে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং বিশেষ করে রাতে অবৈধ সীমান্ত অতিক্রম প্রতিরোধ জরুরি। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পর্যালোচনা ও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়া যথাযথভাবে মিলিত হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী হিন্দুসহ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা উল্লেখ করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশ সরকার তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতার ঘটনাগুলির পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তসহ তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
প্রধানমন্ত্রী বিমসটেকের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করায় বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান এবং এই ফোরামের নেতৃত্বে আঞ্চলিক সহযোগিতা আরও এগিয়ে নেয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। নেতৃবৃন্দ বিমসটেক কাঠামোর আওতায় আঞ্চলিক সংহতিকে এগিয়ে নিতে আলোচনা ও সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হন।
প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করে বলেন যে, দু'দেশের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সবক'টি বিষয় গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান অব্যাহত রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী এক্স-এ একটি পোস্টে আরও বলেছিলেন যে তিনি বাংলাদেশে হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
'বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জনাব মহম্মদ ইউনুসের সাথে দেখা করেছি। বাংলাদেশের সঙ্গে গঠনমূলক ও জনকেন্দ্রিক সম্পর্কের প্রতি ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা, অন্তর্ভুক্তি ও গণতন্ত্রের প্রতি ভারতের সমর্থনের কথা পুনরায় ব্যক্ত করেছি। অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম রোধে গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছি এবং হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও কল্যাণের জন্য আমাদের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছি।
বিমস্টেক সম্মেলনের ফাঁকে আরও বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন মোদী। (এএনআই)