সিরিয়ালের দর্শকদের কাছে তন্বী লাহ রায়ের পরিচয় মূলত খলনায়িকা হিসেবে। তা সে মিঠাই-এর তোর্সা হোক বা চিরদিনই তুমি যে আমার ধারাবাহিকের মীরা, নায়ক-নায়িকাকে একেবারে নাকানি চোবানি খাইয়ে ছাড়েন অভিনেত্রী। তবে এবার তন্বীর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট দেখে রীতিমতো চক্ষু চড়কগাছ নেটপাড়ার। এমন কী লিখলেন, যে নেটিজেনরা মন্তব্য করল, ‘গায়ে কাঁটা দিল’!
কালীঠাকুর কোলে একাধিক ছবি শেয়ার করলেন তন্বী, পরে আছেন লাল আর সাদা শাড়ি। লেখেন, ‘শ্য়ামবাজারে বাড়ি। অনেক পুরনো। আমার ঠাকুমার বাবাড় বাড়ি। তবে আমার ঠাকুরদা সেই বাড়িতে থাতেন ভাড়া দিয়ে। আমার দাদু নিজের সম্মানরক্ষার্থে সেইসময় ১০০ টাকা ভাড়া দিতেন। যদিও , তবুও টাকার অভাবে প্রতি মাসে ভাড়া দেওয়া হত না। ৩ ছেলে-মেয়ে নিয়ে নীচের তলার একটা ছোট্ট ঘরে থাকতেন ঠাকুমা। আর উপরের দু তলায় থাকতেন ঠাকুমার আত্মীয়রা। এমনও দিন গিয়েছে. যখন আমার জ্যেঠু, বাবা আর পিসি ৩ জন মিলে ১টা ডিম ভাগাভাগি করে খেয়েছে। রোজ হয় মুড়ি খেতেন, নয় পান্তা ভাত। ঠাকুরদা ছিলেন ছোট্ট ব্যবসায়ী, ঠাকুমা ভায়োলিন শেখাতেন। তবে পরিবারে খুশি ও আনন্দের কোনো অভাব ছিল না।’
‘আমার ঠাকুরদার এক অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল, উনি নির্ভুলভাবে ভাগ্য বলে দিতেন। আর সেই কারণে সেই সময় অনেক ভক্তও ছিল তাঁর। ঠাকুরদা বলতেন, সবার ভালো চাইলে, নিজেরও ভালো হবে। ওঁরা নিজের হাতে মায়ের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ঠাকুরদা বিশ্বাস করতেন, তারা মা খুশি থাকলে, কখনো অর্থের অভাব হবে না। সেই থেকে ওঁদের মাথায় ছিলতাঁরা মায়ের আশীর্বাদ। মায়ের প্রতিষ্ঠার পর থেকেই হত নিত্যপুজো। শনিবার ভরে যেত দর্শনার্থীতে। বিতরণ হত মিষ্টি।’
‘এরপর বাবা নিজের পুরনো বাড়ি ভেঙে, তা নতুন করে তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়। অনেক ঝড়, জল, অনেক বড় বড় সমস্যাও তাঁকে টলাতে পারনি। ৪ বছরের পরিশ্রমের পর, আজকের বাড়ি। আর এই বাড়ি ভাঙার সময় তারা মা ছিলেন তাঁর এক ভক্তের বাড়িতে। শেষ ২ মাস ছিলেন ভাইজাগে আমার ভাইয়ের বাড়িতে। একাধিক বাধার পর, অবশেষে ফলহারিণী কালীপুজোর দিনই, তারা মা ফিরলেন আমাদেরবাড়িতে। আমার মা বলতেন, যেদিন তারা মা বাড়ি ফিরবেন, সেদিন আমরা সবাই লাল পাড়ের সাদা শাড়িতে সাজব। আমার মাথায় ছিল সেই কথা।
‘বৃষ্টিবেজা দিনেই মা ফিরলেন নিজের বাড়িতে। একেবারে লগ্ন মেনে হল পৃহপ্রবেশ। বাবা বাড়ির নম রেখেছেন দেবাঙ্গন।’, লেখা শেষ করেন তন্বী।