ইনিংস ও ৪৫ রানে জিম্বাবোয়েকে হারিয়ে শুভমন গিলের টিম ইন্ডিয়ার প্রতি হুঁশিয়ারি ছুঁড়ে দিল বেন স্টোকসের ইংল্যান্ড। ২৪ মে শনিবার ট্রেন্ট ব্রিজে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ইংল্যান্ড বনাম জিম্বাবোয়ের একমাত্র টেস্ট। এই ম্যাচে বেন স্টোকসের নেতৃত্বাধীন ইংল্যান্ড দল জিম্বাবোয়েকে সহজেই পরাজিত করে দেয়। এই জয় ইংল্যান্ডের কাছে শুধু একতরফা সাফল্যই নয়, ভারতের বিরুদ্ধে আসন্ন পাঁচ ম্যাচের হোম সিরিজের আগে প্রতিপক্ষের জন্য একটি কঠিন বার্তাও।
এই ম্যাচের নায়ক ছিলেন ইংল্যান্ড দলের তরুণ অফ-স্পিনার শোয়েব বাসির। তিনি ৬ উইকেট নিয়ে (৬/৮১) জিম্বাবোয়ের দ্বিতীয় ইনিংস ধ্বংস করে দেন। তার ম্যাচ সেরা বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৯/১৪৩। এটাই তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং ফিগার। গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে এই ট্রেন্ট ব্রিজেই তিনি নিয়েছিলেন ৫/৭০। ফলে একই মাঠে এটি ছিল তার দ্বিতীয় পাঁচ উইকেট নেওয়া পারফরম্যান্স।
যদিও জিম্বাবোয়ের পক্ষে শন উইলিয়ামস ৮৮ ও সিকান্দার রাজা ৬০ রান করে কিছুটা লড়াইয়ের চেষ্টা করেন, কিন্তু বাসিরের স্পিন ঝড়ের কাছে তারা বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।
এর আগে, ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৫৬৫/৬ রানে ডিক্লেয়ার ঘোষণা করেছিল। ওপেনার জ্যাক ক্রলি (১২৪), বেন ডাকেট (১৪০) ও অলি পোপ (১৭১) — তিনজনেই দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেছিলেন। জিম্বাবোয়ের প্রথম ইনিংসে কিছুটা আলোচনায় ছিলেন ব্রায়ান বেনেট, যিনি মাত্র ৯৭ বলে দেশের পক্ষে দ্রুততম টেস্ট শতরান করেন। তবুও, জিম্বাবোয়ে ২৬৫ রানে গুটিয়ে যায়।
আরও পড়ুন … শুভমন গিল ভারতীয় টেস্ট দলের অধিনায়ক, গ্রামে দাদুর মিষ্টি বিতরণ! খুশি গিল পরিবার
ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস সফল প্রত্যাবর্তন ঘটান। যিনি বল হাতে ২টি উইকেট নেন। এটি ছিল বেন স্টোকসের এই বছরের প্রথম ম্যাচ। উল্লেখযোগ্যভাবে, বাসির এই ম্যাচে বল হাতে দ্যুতি ছড়ালেও, কাউন্টি মরশুমে মাত্র দুটি ফার্স্ট ক্লাস উইকেট নিয়েছিলেন। তাঁর ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তবে এই টেস্টে তিনি পুরোদমে জ্বলে উঠলেন।
এই জয় ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজের আগে ইংল্যান্ডের প্রস্তুতিকে নিখুঁত করে তুলল। আগামী ২০ জুন থেকে শুরু হচ্ছে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। যেখানে ভারতের নেতৃত্বে থাকবেন শুভমন গিল, যিনি রোহিত শর্মার টেস্ট অবসরের পর অধিনায়কত্ব গ্রহণ করছেন। সহ-অধিনায়ক হিসেবে থাকছেন ঋষভ পন্ত। নতুন যুগের সূচনায় ভারতের টেস্ট স্কোয়াডে যুক্ত হয়েছেন সাই সুদর্শন ও অভিমন্যু ঈশ্বরন, যারা প্রথমবার টেস্ট দলে সুযোগ পেয়েছেন।
আরও পড়ুন … ব্যাটার হিসেবে মোটেও ভালো নয়, অধিনায়ক তো দূরের কথা… টেস্ট ক্যাপ্টেন গিলকে নিয়ে আকাশ চোপড়ার প্রশ্ন
অন্যদিকে, জিম্বাবোয়ে এখন ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে জুন-জুলাই মাসে। তাদের জন্য এই হারের পরও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকছে। এ দিনের বড় ব্যবধানে হারের পরেও জিম্বাবোয়ের খেলোয়াড় ও তাদের উদ্দীপিত সমর্থকদের মুখে হাসি ছিল। ২২ বছর পর ইংল্যান্ডে টেস্ট খেলা তাদের জন্য ছিল একটি স্মরণীয় ঘটনা। ট্রেন্ট ব্রিজ গ্যালারি ছিল উৎসবে ভরা। ম্যাচ শেষে সমর্থকদের কৃতজ্ঞতা জানাতে জিম্বাবোয়ে দলের ল্যাপ অফ অনার ছিল খুব আবেগঘন মুহূর্ত।
আরও পড়ুন … সামগ্রিকভাবে দল নির্বাচনটা অবাক করেছে… শ্রেয়সের জন্যই কি এমন বললেন মঞ্জরেকর?
অন্যদিকে এই জয়ের ফলে বেন স্টোকসের ইংল্যান্ড দল দেখিয়ে দিল, তারা আসন্ন মরশুমের জন্য প্রস্তুত। আর জিম্বাবোয়ে প্রমাণ করল, তারা হারলেও সম্মানের সঙ্গে লড়াই করে এবং ভবিষ্যতের জন্য আশাব্যঞ্জক দল।
ইংল্যান্ড ৫৬৫/৬ ডিক্লে. (পোপ ১৭১, ডাকেট ১৪০, ক্রলি ১২৪)
জিম্বাবোয়ে ২৬৫ (বেনেট ১৩৯) ও ২৫৫ (উইলিয়ামস ৮৮, রাজা ৬০, বাসির ৬-৮১)
ইংল্যান্ড জয়ী ইনিংস ও ৪৫ রানে