শেষ ৪৮ ঘণ্টায় কোনওভাবেই তাঁর 'খোঁজ' পাওয়া যাচ্ছিল না। এমনকী তৃণমূল কংগ্রেস নেতারাও নাকি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। সেই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ দাবি করেছিলেন যে উলটো রথের উপোস করে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন যুব তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। তবে সেই ‘অসুস্থতা’ সত্ত্বেও নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির দফতরে হাজিরা এড়ালেন না তিনি। বরং সিজিও কমপ্লেক্সে ঢোকার সময় আত্মবিশ্বাসের সুরে সায়নী বলেন, ‘আমি পঞ্চায়েতের ভোটের প্রচারে ছিলাম। আমায় ৪৮ ঘণ্টার নোটিশে ডাকা হয়েছে। তাতে এসেছি আমি।' সেইসঙ্গে তিনি বলেন, '১০০ শতাংশ সহযোগিতা করব। প্রতিহিংসার কারণে ডাকা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ইডি তৈরি করে রেখেছে প্রশ্নপত্র, 'উপোস করে দুর্বল' সায়নীকে কোন প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে?
শুক্রবার সকাল ১১টা ৩০ মিনিটের মধ্যে সায়নীকে সিজিও কমপ্লেক্সে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে তিনি আদৌও হাজিরা দেবেন কিনা, তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। কারণ গত বুধবার ইডির তলবের থেকে কার্যত উধাও হয়ে গিয়েছিলেন সায়নী। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকেও কিছু জানাননি বলে দাবি করা হচ্ছিল। তবে সকাল ১০টা নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে পুলিশি ব্যস্ততার ছবি দেখেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে সায়নী আসছেন। শেষপর্যন্ত সকাল ১১ টা ২৩ মিনিটে সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছে যান যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী।
আরও পড়ুন: Calcutta High court: অবৈধভাবে স্কুলে চাকরি পেয়েছেন বাংলাদেশি নাগরিক! বেতন বন্ধের নির্দেশ
হাসিমুখে গাড়ি থেকে নেমেই সায়নী দাবি করেন, কোথাও উধাও হয়ে যাননি। পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন। ৪৮ ঘণ্টার নোটিশে ডাকা এলেও হাজিরা এড়াননি বলে আত্মবিশ্বাসের সুরে বলেন সায়নী। সঙ্গে তিনি দাবি করেন যে ইডিকে সবরকমের সাহায্য করবেন। তবে যে কুন্তল ঘোষের (নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত) সঙ্গে তাঁর একাধিক ছবি দেখা গিয়েছে (ছবির সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা), সেই বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি সায়নী। ‘কুন্তলকে কতদিন ধরে চেনেন’ জাতীয় প্রশ্ন পুরোপুরি এড়িয়ে যান।
সায়নীকে কী কী জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে?
ইডি সূত্রে খবর, সায়নীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার পাতার প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য জানতে হওয়া হবে। কীভাবে কুন্তলকে চেনেন, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বাজার থেকে কোটি-কোটি থাকা তুলে থাকা কুন্তলের কীর্তির বিষয়ে জানেন কিনা, ফ্ল্যাট কেনার সময় নগদ হিসেবে দেওয়া বড় অঙ্কের টাকার সূত্র কী, কুন্তলকে কোনও চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা দিয়েছিলেন কিনা, কোনও বেনামি সম্পত্তি আছে কিনা, সেই সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, একটি ফ্ল্যাটের কেনাবেচার ক্ষেত্রে সায়নীর নামও উঠে এসেছিল। সেই ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে যে পরিমাণ টাকা ব্যবহার করা হয়েছে, সেই অঙ্কটা চমকে দেওয়ার মতো। ফলে যাবতীয় তথ্য খুঁটিয়ে দেওয়া হবে। আর আজ যে বয়ান রেকর্ড করবে ইডি, তা আদালতেও পেশ করা যাবে বলে ইডি সূত্রে খবর।