তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অপমানজনক কোনও বিজ্ঞাপন প্রকাশ করতে পারবে না বিজেপি। এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওরকম কোনও বিজ্ঞাপন প্রকাশ করার ক্ষেত্রে বিজেপির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে ওই ঘটনায় নির্বাচন কমিশনকেও তুমুল ভর্ৎসনা করেছে হাইকোর্ট। কড়া ভাষায় বিচারপতি ভট্টাচার্য মন্তব্য করেন যে তৃণমূলের অভিযোগের পরও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিষয়টির সমাধান করতে ‘চূড়ান্ত ব্যর্থ’ হয়েছে কমিশন। আর সেই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে কমিশনকে আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল। কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র বলেছেন যে নির্বাচন কমিশনের নামের শেষে ‘ঘুমন্ত’ যোগ করে নেওয়া উচিত।
হাইকোর্টে কানমলা খেয়েছে বিজেপি
হাইকোর্ট মন্তব্য করেছে যে 'সাইলেন্স পিরিয়ড'-এ বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ করেছে বিজেপি। লঙ্ঘিত করেছে তৃণমূল এবং সাধারণ ভোটারদের অধিকার। তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছিল বিজেপি, তা চূড়ান্ত অবমাননাকর। নিজের প্রতিদ্বন্দ্বীকে অপমান করতে এবং ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে সেই বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছিল। তাই পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এরকম বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা থেকে বিজেপিকে বিরত থাকতে হবে বলে জানিয়েছে হাইকোর্ট।
কমিশনের তুলোধোনা হাইকোর্টের
বিজেপি যেমন কানমলা খেয়েছে, তেমনই তুমুল ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে কমিশন। পদ্মশিবিরের প্রকাশ করা বিজ্ঞাপন নিয়ে তৃণমূল অভিযোগ জানানোর পরেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কেন কমিশনের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তা নিয়ে চূড়ান্ত উষ্মাপ্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, 'তৃণমূল কংগ্রেস যে অভিযোগ করেছে, তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমাধান করতে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশন।'
তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া
হাইকোর্টের সেই নির্দেশের পরই তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে, ‘সত্যমেব জয়তে।’ আর মহুয়া আরও একধাপ এগিয়ে বলেছেন, 'জাতীয় নির্বাচনের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলের নামটা @ECISVEEP থেকে পালটে ECISLEEP করে দেওয়া উচিত।'
কোন বিজ্ঞাপন নিয়ে মামলা করা হয়েছিল?
সম্প্রতি একাধিক সংবাদমাধ্যমে একাধিক বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছিল বিজেপি। দুটি বিজ্ঞাপন নিয়ে আপত্তি জানিয়ে কমিশনে অভিযোগ দায়ের করে তৃণমূল। কিন্তু কমিশনে অভিযোগ দায়েরের পরও কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করা হয়। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই আজ কমিশনকে ভর্ৎসনা করেছে হাইকোর্ট। উল্লেখ্য, হাইকোর্টে তুমুল ভর্ৎসিত হওয়ার দেড়দিন আগে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে শোকজ করেছে কমিশন। আগামিকাল বিকেল পাঁচটার মধ্যে তাঁকে উত্তর দিতে হবে।