মালদার ইংরেজবাজারে তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুনের তদন্তে শহর তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারিকে তলব করল পুলিশ। যার ফলে স্পষ্ট হয়ে গেল, তৃণমূলের কোন্দলেই দুলাল সরকার খুন হয়েছেন ধরে নিয়ে তদন্ত করছেন পুলিশ আধিকারিকরা। ওদিকে নরেন্দ্রনাথবাবু এদিন বলেন, খুনের রাজনীতি করিনি। কোনও দিন ভাবিনি এই অভিযোগ ফেস করতে হবে। তৃণমূল নেতা খুনে তৃণমূল নেতাকেই পুলিশ তলব করায় শোরগোল পড়েছে ইংরেজবাজার শহর জুড়ে। এব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
গত ২ জানুয়ারি ইংরেজবাজার শহরে নিজের পাইপ কারখানার সামনে আততায়ীদের গুলিতে খুন হন তৃণমূল নেতা তথা কাউন্সিলর দুলাল সরকার। তাঁকে তাড়া করে গুলি করে ২ আততায়ী। সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে কী কারণে খুন তা এখনও জানাতে পারেননি তদন্তকারীরা। ওদিকে রাজনীতিতে দুলাল সরকারের থেকে পিছিয়ে পড়ে দলেরই একাংশ তাঁকে খুন করিয়েছে বলে দাবি করেন নিহত তৃণমূল নেতার স্ত্রী। তবে কারও নাম করেননি তিনি। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি ও তাঁর ২ ভাইকে তলব করল পুলিশ।
এদিন ইংরেজবাজার থানায় হাজিরা দেন নরেন্দ্রনাথবাবু ও তাঁর ২ ভাই। বেশ কিছুক্ষণ থানায় ছিলেন তাঁরা। তবে পুলিশ আধিকারিকরা তাঁদের কী জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তা জানা যায়নি। এর পর নরেন্দ্রনাথবাবু থানা থেকে বেরিয়ে বলেন, ‘কারও মৃত্যু কামনা করিনি। কোনও দিন মৃত্যুর রাজনীতি করিনি। আমাকে তবু দোষারোপ করা হচ্ছে। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ তদন্ত করছে। সত্যটা একদিন বেরিয়ে আসবে। এই সত্য বেরনোর অপেক্ষায় বসে আছি। স্বপ্নে ভাবিনি এটা কোনও দিন আমাদের ফেস করতে হবে। পুলিশ প্রশাসনের ওপর ভরসা আছে।’ নরেন্দ্রনাথবাবুর ভাই বীরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি বলেন, আমি রাজনীতি কিছু জানিই না। আমাদের পরিবারের কেউ এর সঙ্গে যুক্ত নয় এটুকু বলতে পারি।
যদিও বাবলা সরকারের পরিবার ও অনুগামীরা তা মানতে রাজি নয়। তাদের দাবি, নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারির সঙ্গে বাবলা সরকারের বিবাদ নতুন নয়। গত পৌরসভা নির্বাচনের পর বাবলা অনুগামীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি। গত কয়েক বছরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন বাবলা। এমনকী শহরের পরবর্তী পুরপ্রধান হিসাবে তাঁর নাম নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। পথের কাঁটা সরাতে তাই বাবলা সরকারকে খুন করিয়েছেন নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারিই।