আবার রক্তাক্ত হল পুলিশ। মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে গ্রামবাংলায় উচ্চগ্রামে বক্স বাজছিল। সেটা বন্ধ করতে যায় পুলিশ। আর তখনই ইটের আঘাতে মাথা ফাটল পান্ডুয়া থানার এএসআই রাজদেব হাজরার। আর তার সঙ্গে আহত হন এক ভিলেজ পুলিশও। আজ, শনিবার এই ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে পাঁচঘরা তোড় গ্রাম পঞ্চায়েতের নিয়াল গ্রামে। এই ঘটনায় কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। কদিন আগে বীরভূমে নকল কয়েনের কারবার বন্ধ করতে গেলে আক্রান্ত হয় লাভপুর থানার পুলিশ। তার আগে দুই গোষ্ঠীর ঝামেলা থামাতে গেলে সিউড়ি থানার আইসির কলার ধরে টানা হয়।
এখানেই শেষ নয়, খাস কলকাতাতেও চলতি সপ্তাহে আক্রান্ত হয় পুলিশ। গার্ডেনরিচ থানার এসআইকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া যাদের কর্তব্য তাদেরকেই আক্রান্ত হতে হচ্ছে। সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। মাঝে শুধু রবিবার দিনটা বাকি। পাঁচদিন আগে সরস্বতী পুজো হয়ে গেলেও এখনও প্রতিমা নিরঞ্জন হয়নি নিয়াল গ্রামে। আজ, শনিবার একদল যুবক উচ্চগ্রামে বক্স বাজিয়ে হুল্লোড় করছিল বলে অভিযোগ। তাতে পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি নিতে সমস্যা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগ গ্রামবাসীরা পৌঁছে দেয় থানায়। তারপরই শুরু হয় অ্যাকশন।
আরও পড়ুন: ‘কেজরিওয়ালের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে’, দিল্লি ফলাফলে মত জয়রাম রমেশের
পুলিশ অ্যাকশন নিতেই পাল্টা ইটবৃষ্টি শুরু হয়। পুলিশ সাউন্ড বক্স বন্ধ করতে গ্রামে পৌঁছলে তুলকালাম কাণ্ড বেঁধে যায়। বচসা–অশান্তি থেকে শুরু করে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি পর্যন্ত হয়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, পুলিশকে ঘিরে মারধর, ইট ছোড়া–সহ রণক্ষেত্রের আকার নেয় এলাকা। তার জেরেই মাথা ফেটে যায় পান্ডুয়া থানার অফিসার রাজদেব হাজরার এবং আহত হন ভিলেজ পুলিশ সুদীপ ঘোষ বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁরা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাঁদের পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনার খবর পেয়ে হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (ডিএসপি ক্রাইম) নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে হাজির হয়।
এমন ঘটনা দেখে অনেকে চমকে যান। কারণ রাস্তায় মাথা ফেটে রক্তে ভেসে যায়। এই ঘটনা নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। এখন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই হামলার ঘটনা নিয়ে এএসআই রাজদেব হাজরা বলেন, ‘উচ্চগ্রামে বক্স বাজাচ্ছিল। প্রথমে একাধিকবার সতর্ক করা হয়। কিন্তু সেসব কথা ওরা শোনেনি। তাই আমাদের সেখানে গিয়ে বক্স বন্ধ করতে হয়। বন্ধ করে সেসব বক্স ফিরিয়ে নিয়ে আসার সময় একদল যুবক আমাদের দিকে তেড়ে আসে। কয়েকজন আমাকে ঘিরে কলার ধরে টানাটানি করে এবং পিছন থেকে কিল চড় মারতে থাকে। তারপর একটা বড় ইট নিয়ে এসে আমার উপর আঘাত করতেই আমার মাথা ফেটে যায়।’