পরিবেশগত এবং অন্যান্য ছাড়পত্র সংগ্রহের কাজ সারা হয়ে গেলেই কি রানাঘাটের মাটির নীচে থাকা জ্বালানির ভাণ্ডারের নির্দিষ্ট অবস্থান চিহ্নিতকরণ ও সেখান থেকে তা আহরণ সংক্রান্ত প্রকল্প রূপায়ণের কাজ শুরু হয়ে যাবে? খানিকটা তেমনই বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী।
উল্লেখ্য, রানাঘাটে যে প্রকৃতিগতভাবেই জ্বালানির বিপুল ভাণ্ডার রয়েছে, আগেই তা আবিষ্কার করেছে ওএনজিসি। কেন্দ্রের বক্তব্য, তারা এই ভাণ্ডারের অবস্থান অনুসন্ধানের কাজ শুরু করতে আগ্রহী। এবং তার জন্য পাইপলাইন বসানো থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের প্রশ্নের জবাবে বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী। তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই অনুসন্ধানের কাজ বেশ কিছুটা এগিয়েছে এবং সেই মতো উন্নয়ন পরিকল্পনাও প্রস্তুত করে ফেলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। শুধুমাত্র পরিবেশগত ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে অন্য়ান্য প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রও জোগাড় করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এপ্রিল মাসেই জানা গিয়েছিল, রানাঘাটের মাটির নীচে রয়েছে বিরাট 'খজানা'! সেই সম্পদ নির্দিষ্টভাবে খুঁজে পেতে এবং উত্তোলন করতে গত আটমাস ধরে কেন্দ্রীয় সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে সংসদে সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন জগন্নাথ সরকার।
এর জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, গত ১৫ এপ্রিল রানাঘাটে খনিজ জ্বালানির সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু, ঠিক কতটা পরিমাণে হাইড্রোকার্বন রানাঘাটের মাটির নীচে রয়েছে, সেটা এখনও পরিমাপ করা সম্ভব হয়নি।
এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ২০২৭ সালের ৯ মে পর্যন্ত সময় রয়েছে। তাদের তরফে নিযুক্ত বিশেষজ্ঞরা প্রথমে সংশ্লিষ্ট এলাকার জমির মূল্যায়ন করবেন। তারপর সেখানকার মাটির নীচে কতটা পরিমাণে হাইড্রোকার্বন থাকতে পারে, তা খতিয়ে দেখা হবে।
আপাতত এই সংক্রান্ত যতটুকু তথ্য হাতে এসেছে, সেটুকুর উপর নির্ভর করেই একটি 'ফিল্ড ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান' বা এফডিপি তৈরি করা হয়েছে। পাইপলাইন বসানো থেকে শুরু করে খনিজ পদার্থ উত্তোলন - এই সবকিছুর জন্য যা যা পরিকাঠামো গড়ে তোলা দরকার, সেসবের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, রানাঘাটে খনিজের উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু করা হলে, ওই এলাকা এবং তার আশপাশের অঞ্চলে পরিবেশের উপর তার কতটা প্রভাব পড়বে, সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার। তার জন্য একটি সমীক্ষা হবে।
এলাকার বাসিন্দারা এই বিষয়ে কী ভাবছেন, তা জানতে তাঁদের মতামতও নেওয়া হবে। প্রয়োজনীয় সমস্ত ছাড়পত্র এবং সম্মতি পাওয়ার পরই বিভিন্ন সংস্থা রানাঘাটে খনিজের অনুসন্ধানের কাজ শুরু করতে পারবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।