আবারও উত্তরপ্রদেশ। আবারও তথাকথিত প্রেমিকের সাহায্যে স্বামীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ স্ত্রীর বিরুদ্ধে! সেইসঙ্গে, ট্রলি ব্যাগে ভরে দেহ লোপাটের চেষ্টা করাও অভিযোগ উঠল! এবারের ঘটনাস্থল উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়া।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় যে ব্যক্তির দেহ ট্রলি ব্যাগ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁর নাম নওশাদ আহমেদ। ৩৮ বছরের নওশাদ আদতে উত্তরপ্রদেশের ভাটোলির বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে থাকতেন দুবাই। সেখানে তিনি গাড়চালকের কাজ করতেন। তাঁর মৃত্যুর মাত্র দিন দশেক আগেই তিনি দুবাই থেকে বিমানে দেশে ফেরেন।
এখনও পর্যন্ত পুলিশের তদন্তে যতটুকু তথ্য সামনে এসেছে, তাতে জানা গিয়েছে, নওশাদ আহমেদকে খুন করা হয় গত ১৯ এপ্রিল (২০২৫)। তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয় একটি ট্রলি ব্যাগের ভিতর থেকে। একটি খামারের জমিতে পড়ে ছিল সেই ট্রলি ব্যাগটি। যে জায়গায় সেই খামারটি অবস্থিত, সেখান থেকে নওশাদের বাড়ির দূরত্ব প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। গত ২০ এপ্রিল ওই যুবকের দেহটি ট্রলি ব্যাগে বন্দি ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, নওশাদকে কুপিয়ে খুন করার পর তাঁরই ট্রলি ব্যাগে ভরে দেহ লোপাটের চেষ্টা করা হয়। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে নওশাদের স্ত্রী রাজিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ২০ এপ্রিল রাতই তাঁকে পাকড়াও করা হয়। জানা গিয়েছে, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই স্বামীকে খুন করে থাকতে পারেন রাজিয়া।
পুলিশের দাবি, ৩০ বছরের রাজিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান রুমান নামে এক যুবক। যিনি আবার নওশাদেরই ভাইপো! খুব সম্ভবত, নওশাদকে খুন করতে এবং তাঁর দেহ লোপাট করতে রাজিয়াকে সাহায্য করেছিলেন এই যুবক। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে - এই ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই রুমান বেপাত্তা। তাঁর খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, নওশাদ খুনের তদন্তে রহস্য উন্মোচনের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছে তাঁর দেহ লোপাটের জন্য ব্যবহৃত ট্রলি ব্যাগ ও তাতে লেগে থাকা 'এয়ারলাইন ব্যাগেজ ট্যাগ'টি।
জানা গিয়েছে, গত ২০ এপ্রিল সকালে একজন কৃষক সংশ্লিষ্ট খামারের জমিতে একটি বেওয়ারিশ ট্রলি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে সেখানে পুলিশ পৌঁছলে এবং ট্রলি ব্যাগের ভিতর থেকে দেহ উদ্ধার হলে প্রথমেই নিহত ব্যক্তির পরিচয় জানার চেষ্টা করা হয়। এক্ষেত্রে 'এয়ারলাইন ব্যাগেজ ট্যাগ'-এর সাহায্য নেওয়া হয়। যা প্রথমেই পুলিশকে পৌঁছে দেয় লখনউয়ের চৌধুরী চরণ সিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
সেখানে তদন্তের পর জানা যায়, নিহত ব্যক্তির নাম নওশাদ আহমেদ। এবং তিনি বিমানে দুবাই থেকে ভারতে ফিরেছিলেন। পরবর্তীতে বিদেশি সিম কার্ড ও কিছু নথির প্রতিলিপিও পুলিশের ভীষণ কাজে আসে।
পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, নওশাদের ভাইপো - রুমানের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়াতেই স্বামীকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেন রাজিয়া! কারণ, তাঁর মনে হয়েছিল, স্বামী জীবিত থাকলে রুমানকে হারাতে হবে তাঁকে!
প্রসঙ্গত, এই উত্তরপ্রদেশেরই মিরাটে সম্প্রতি সৌরভ রাজপুতের খুনের ঘটনা সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণেই সৌরভের স্ত্রী মুসকান ও তাঁর প্রেমিক সাহিল তাঁকে খুন করে ড্রামে ভরে রাখেন বলে অভিযোগ!
এর কিছুদিন পর একই কারণে মিরাটের আকবরপুর সাদত গ্রামের বাসিন্দা অমিত কাশ্যপ নামে এক যুবককে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ ওঠে তাঁর স্ত্রী রবিতা ও তাঁর প্রেমিক অমরদীপের বিরুদ্ধে।