তিনি নির্দোষ। তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। এমনই দাবি করেছেন সোনা পাচারের অভিযোগে ধৃত জনপ্রিয় কন্নড় অভিনেত্রী রানিয়া রাও। সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু তাই নয়, জেরার সময় তিনি ভেঙে পড়েন বলেও খবর। এর আগে আইনজীবীর কাছে রানিয়া রাও জানান, 'মানসিক অবসাদে ভুগছি। আমি ঘুমোতে পারছি না। বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতারির স্মৃতি যেন আমাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে।'
জেরায় অভিনেত্রী তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, ১৭টি সোনার বার তাঁর কাছে ছিল। তবে তদন্তকারীদের এই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে যে, অভিনেত্রী কি সত্যিই অজান্তে এই পাচারচক্রের ফাঁদে পড়েছেন, নাকি তিনি সরাসরি এই চক্রের সঙ্গেই জড়িত?
তদন্তকারীরা এটাও মনে করছেন, অভিনেত্রী যদি সত্যিই ফাঁদে পড়ে থাকেন, তা হলে এই চক্রের নেপথ্যে কে বা কারা এবং কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি এই ফাঁদে পড়েছেন, সেই তথ্য অবশ্যই তদন্তকারীদের সামনে তুলে ধরবেন।তদন্তকারীদের মধ্যে যে বিষয়টি নিয়ে আরও সংশয় তৈরি হচ্ছে তা হল, সম্ভ্রান্ত এবং বিত্তশালী পরিবারের এক জন সদস্য হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে পাচারচক্রের কাজে জড়িয়ে পড়লেন? তাহলে কি ঘনিষ্ঠ বৃত্তেরই কেউ অভিনেত্রীর এই ঘটনায় জড়িত?
ইতিমধ্যেই অভিনেত্রীর মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করেছে ডিআরআই। অভিনেত্রীর সঙ্গে নিয়মিত যাঁরা যোগাযোগ রাখতেন তাঁদের একটা তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সোনা পাচারের সঙ্গে তাঁদের কারও যোগ রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হবে বলে সূত্রের খবর। এছাড়াও অভিনেত্রীর গত দু’বছরের ব্যাঙ্কের নথি এবং লেনদেনের তথ্য খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
গত ৩ মার্চ বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১২ কোটি টাকার সোনা-সহ গ্রেফতার হয়েছেন রানিয়া রাও। অভিনেত্রীর গ্রেফতারির পর থেকেই নানা প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে, জল্পনাও চলছে বিস্তর। অভিনেত্রীকে নিজেদের হেফজাতে রেখে জেরা করছে রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগ (ডিআরআই)। উল্লেখ্য, অভিনেত্রীর বাবা রামচন্দ্র রাও একজন আইপিএস অফিসার। বছর কয়েক আগে ম্যাইসুরুতে একটি সোনা পাচারের মামলায় নাম জড়িয়েছিল তাঁরও। এবার ওই অফিসারের কন্যাই ধরা পড়লেন সোনা পাচার মামলায়। তিনি জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁর উপর কোনও জোরাজুরি করা হয়নি। তিনি কোনও চাপের মুখে এই বিবৃতি দিচ্ছেন না।
অন্যদিকে, বেঙ্গালুরুর অর্থনৈতিক অপরাধের বিশেষ আদালত অভিনেত্রীকে ১০ মার্চ পর্যন্ত ডিআরআইয়ের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। তাঁকে প্রতিদিন আধ ঘণ্টার জন্য আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ডিআরআই-কে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা অনুসরণ করে তদন্ত পরিচালনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।