'কাশী বাঙালির সেকেন্ড হোম লালমোহনবাবু। দেড় লাখ বাঙালি থাকে কাশীতে!' সেই কবে 'জয়বাবা ফেলুনাথ' ছবিতে ফেলুদার চরিত্রকে বন্ধু জটায়ুর উদ্দেশে একথা বলতে শোনা গিয়েছিল!
আজ, সেই কাশী বা বারাণসীর অনেক বদল ঘটেছে এবং ঘটছে। তবুও কাশীর প্রতি বাঙালির টান কমেনি। আজও বিশ্বনাথের মন্দিরে পুজো দিতে প্রতিবছর বহু বাঙালি কাশী বা বারাণসী বা বেনারস যান! সড়ক পথে কলকাতা থেকে উত্তরপ্রদেশের কাশী বা বারাণসী পৌঁছতে বর্তমানে সময় লাগে ১২ ঘণ্টারও বেশি (মোটামুটি ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা)। কিন্তু, আগামী দিনে এর অর্ধেক সময়ে কলকাতা থেকে কাশী পৌঁছানো যাবে! সৌজন্যে নয়া এক্সপ্রেসওয়ে।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, কলকাতা ও বারাণসীর মধ্যে তৈরি হতে চলা এই এক্সপ্রেসওয়েটি বারাণসী-চান্দৌলি রুটের সঙ্গেও সংযুক্ত থাকবে। এই বেল্টটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২৭ কিলোমিটার এবং এর জন্য খরচ ধরা হয়েছে ১,৫০০ কোটি টাকা।
ভারতের জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে সংবাদমাধ্যকে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই বারাণসী থেকে কলকাতা পর্যন্ত গ্রিন ফিল্ড প্রকল্প শুরু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের অন্যতম অংশ হল - বারাণসী থেকে চান্দৌলি পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটারের সংযোজিত অংশটি। এবছরের জানুয়ারি থেকে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এবং এই কাজ শেষ হলে সড়ক পথে কলকাতা ও বারাণসীর মধ্য়ে দূরত্ব এবং সময় দুটোই কমবে।
এত দিন সড়ক রুট ধরে কেবলমাত্র জি টি রোডের মাধ্যমেই কলকাতা ও বারাণসী পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত ছিল। কিন্তু, সমস্য়া হল - ওই রুটে যাত্রীবাহী যান যেমন যাতায়াত করে, তেমনই পণ্যবাহী ভারী গাড়িও চলাচল করে। ফলে ট্রাফিকের গতি শ্লথ হয়। এতে দুই ধরনের গাড়িরই সমস্যা হয়।
কিন্তু, নয়া এক্সপ্রেসওয়ে ধরে যান চলাচল শুরু হলে পুরোনো রুটে গাড়ির চাপ অনেকটাই কমবে। তাতে পুরোনো রুটেও গাড়ির গতি বাড়বে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এত দিন যাঁরা বাসে বা গাড়িতে কলকাতা থেকে কাশী যেতেন, তাঁদের কাছে কোনও বিকল্প রুট ছিল না। কিন্তু, আগামী দিনে তাঁদের কাছে দু'টি বিকল্প থাকবে। তাছাড়া, নতুন এক্সপ্রেসওয়ে ধরে গেলে তাঁরা ১২ ঘণ্টার বদলে মাত্র ৬ ঘণ্টাতেই নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছতে পারবেন।
ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, নয়া এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পর, গোরক্ষপুর, আজমগড়, মউ, বালিয়া, গাজিপুর, জৌনপুর, প্রয়াগ, লখনউ এবং দিল্লি থেকে আসা রুটগুলি চান্দৌলি হয়ে বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা পর্যন্ত যাত্রীদের পৌঁছে দেবে। ফলে পর্যটক থেকে পুণ্য়ার্থী - সকলেই উপকৃত হবেন।