গুজরাট টাইটান্স (GT)-এর অধিনায়ক শুভমন গিল সাধারণত প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের আউট করার পর খুব একটা আগ্রাসী সেলিব্রেশন করেন না। যদি তার দল কোনও ভুল সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে তিনি আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলতে পিছপা হন না, তবে কাউকে আউট করে স্লেজিং বা সেন্ড-অফ দেওয়া তার স্বভাব নয়। কিন্তু কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি শুভমন গিল। এই ম্যাচে কেকেআরের অলরাউন্ডার বেঙ্কটেশ আইয়ারের আউটের পরে এক অন্য রকম শুভমন গিলকে দেখা যায়।
কেকেআরের ২০০ রানের লক্ষ্য তাড়ার ১২তম ওভারে, গুজরাটের বাঁ-হাতি স্পিনার সাই কিশোর একটি লম্বা ফ্লাইটে বল দেন বেঙ্কটেশ আইয়ারকে। বেঙ্কটেশকে বড় শট খেলতে প্রলুব্ধ করেন সাই কিশোর। ছন্দে না থাকা আইয়ার ম্যাচ-আপ কাজে লাগাতে গিয়ে বলটিকে স্লগ সুইপ (slog sweep) করার চেষ্টা করেন। তবে সাই কিশোর বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে বলটি কিছুটা থমকে দেন। এতে আইয়ার টাইমিং হারিয়ে ফেলেন এবং বল সোজা গিয়ে জমা পড়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ওয়াশিংটন সুন্দর হাতে।
আরও পড়ুন … ও নিজেকে আয়নায় দেখে প্রশ্ন করুক… রোহিত শর্মার নেতৃত্ব ও ফর্ম নিয়ে স্টিভ ওয়াহ’র সতর্কবার্তা
ওয়াশিংটন সুন্দর ক্যাচ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুভমন গিল উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠেন। আকাশের দিকে হাত ছোড়েন, গর্জন ওঠে ইডেনের গ্যালারিতেও। গিল কয়েকটি উত্তেজনাপূর্ণ শব্দ উচ্চারণ করে দৌড়ে গিয়ে কিশোরের বুকে চাপড় মারেন। বেঙ্কটেশ আইয়ার মাথা নীচু করে ধীরে ধীরে প্যাভিলিয়নের দিকে হাঁটেন। ১৯ বলে মাত্র ১৪ রান করেই তিনি সাজঘরে ফিরে যান। তখন কেকেআরের স্কোর ছিল ১১.৩ ওভারে ৮৪/৩। গিল পরে বলেন, এটিই ছিল ম্যাচের সেই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত যেখানে তারা ‘ম্যাচ বন্ধ করে দেন’।
আরও পড়ুন … Neeraj Chopra Classic: বড় ঘোষণা! নতুন স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে ভারতের সোনার ছেলে নীরজ চোপড়া
শেষ পর্যন্ত GT কেকেআরকে ২০ ওভারে ১৫৯/৮ রানে আটকে রেখে ৩৯ রানে জিতে যায়। আট ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তারা প্লে-অফের দিকে অনেকটাই এগিয়ে যায়। বেঙ্কটেশ আইয়ারকে আউট করার পর আগ্রাসী সেলিব্রেশন করার কারণ জানালেন শুভমন গিল।
ম্যাচ জয়ের পর গিলকে তার অস্বাভাবিক সেলিব্রেশন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটি ছিল আবেগপ্রবণ একটি মুহূর্ত। গিল বলেন, ‘আমরা ম্যাচে এগিয়ে ছিলাম, কিন্তু এগিয়ে থাকা আর সেই ম্যাচ শেষ করে আসা—এই দুইটা আলাদা ব্যাপার। ভালো দলগুলো ম্যাচ যখন তাড়া করে বা ডিফেন্ড করে, তখন তারা তা নিখুঁতভাবে শেষ করে। তাই ওই সময়টা ছিল আমার আবেগের প্রকাশ।’
আরও পড়ুন … রাহুল দ্রাবিড়ের রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ! উঠছে তদন্তের দাবি
এই ম্যাচে গিল ৫৫ বলে ৯০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন, আর তার সঙ্গী সাই সুদর্শন করেন ৫২ রান—যা ছিল চলতি মরশুমে তার পঞ্চম হাফ-সেঞ্চুরি। তাদের ১১৪ রানের জুটি গুজরাটকে শক্ত ভিত দেয়। এরপর জোস বাটলার ঝড় তোলেন ২৩ বলে অপরাজিত ৪১ রান করে, যেখানে ছিল আটটি বাউন্ডারি।
শেষে শুভমন গিল বলেন, ‘আমরা শুধু চাই আমাদের সেরা খেলা খেলতে, যখনই মাঠে নামি। আমাদের মধ্যে এটা নিয়ে কোনও কথা হয় না যে একজনকে শেষ পর্যন্ত থাকতে হবে। আমরা কেবল আলোচনা করি, কীভাবে এই কন্ডিশনে রান করা যায়, এবং কীভাবে ম্যাচটা গভীরে নিয়ে যাওয়া যায়।’