নতুন বছরের শুরু থেকেই জলভাগের সুরক্ষা আরও জোরদার করতে চলেছে ভারতীয় নৌসেনা। আর তার জন্য সম্পূর্ণভাবে দেশীয় প্রযুক্তির উপর নির্ভর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্য়েই ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় আগ্রাসন দেখাতে শুরু করেছে চিন। পুরোনো সমস্ত রেকর্ড ভেঙে সম্প্রতি ভারত মহাসাগরে অনেকটা বেশি পরিমাণে নৌসেনার সম্প্রসারণ ঘটিয়েছে তারা। বিষয়টা ভারতের কাছে যথেষ্ট উদ্বেগের। সেই কারণে নতুন বছরের শুরু থেকেই জলভাগে নিরাপত্তায় ঝাঁপিয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নৌবাহিনী।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসেই আরও দু'টি যুদ্ধ জাহাজ এবং একটি সাবমেরিন নজরদারি ও সুরক্ষা প্রদানের কাজে সাগরে নামানো হবে।
এই দু'টি রণতরী হল যথাক্রমে - গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার হিসাবে নির্মিত আইএনএস সুরত। সর্ববৃহৎ এই রণতরীটির ওজন ৭,৪০০ টন। এছাড়াও, এই তালিকায় রয়েছে আইএনএস নীলগিরি। যার ওজন ৬,৬৭০ টন। আর এই দুই জাহাজকে যোগ্য সঙ্গত দিতে সমুদ্রে তলদেশ থেকে সুরক্ষা প্রদান করবে ডুবোজাহাজ বা সাবমেরিন ভাগশীর (১,৬০০ টন)।
ভারতীয় নৌবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, এই তিনটি যুদ্ধযানই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও অস্ত্রশস্ত্র দ্বারা সজ্জিত। এতে রয়েছে অত্যাধুনিক মানের সেন্সর এবং একাধিক প্রাণঘাতী হাতিয়ার।
এদের মধ্য়ে আইএনএস সুরত এবং আইএনএস নীলগিরি যুদ্ধজাহাজ দু'টি গত সপ্তাহেই হাতে পেয়েছে নৌসেনা। মুম্বইয়ের মাজাগাঁও ডকে এই দু'টি জাহাজ নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এগুলির মধ্যে আইএনএস সুরতের দৈর্ঘ্য ১৬৪ মিটার। তার পূর্বসূরি তিনটি যুদ্ধজাহাজ হল - আইএনএস বিশাখাপত্তনম, আইএনএস মোর্মুগাঁও এবং আইএনএস ইম্ফল। ওই যুদ্ধজাহাজটি ৩৫ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্পের অধীনে নির্মাণ করা হয়েছে। মুম্বইয়ের মাজাগাঁও ডক এলাকায় নির্মিত সেই মূল প্রকল্পটির নাম হল, প্রজেক্ট - ১৫বি।
অন্যদিকে, আইএনএস নীলগিরি নির্মাণ করা হয়েছে প্রজেক্ট - ১৭এ -র অধীনে। এই প্রকল্পে মোট সাতটি এমন জাহাজ নির্মাণ করা হবে, যার ব্যবহার হবে বহুমুখী। সেই সিরিজের প্রথম সদস্য হল এই আইএনএস নীলগিরি। যার মধ্য়ে প্রথম চারটি (নীলগিরি-সহ) নির্মাণ করা হবে মুম্বইয়ে। আর শেষ তিনটি তৈরি করা হবে কলকাতায়। সব মিলিয়ে এই প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা।
অন্যদিকে, ভাগশীর হল ফরাসী প্রযুক্তিতে নির্মিত ছ'টি স্করপিয়ন অথবা কলভারি-ক্লাস সাবমেরিন সিরিজের সর্বশেষ সদস্য। যা প্রজেক্ট - ৭৫ -এর অধীনে নির্মিত হয়েছে। এই প্রকল্পে খরচ ধরা হয়েছে ২৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি।