ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্য়ানেজমেন্ট বেঙ্গালুরু (আইআইএম-বি)-এর এক পড়ুয়ার আকস্মিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। রবিবার সকালে প্রতিষ্ঠানের হস্টেল চত্বরেই ২৯ বছরের ওই পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার করা হয়।
সূত্রের দাবি, দেহ উদ্ধার হওয়ার কিছুক্ষণ আগেও ওই পড়ুয়া বন্ধুদের সঙ্গে নিজের জন্মদিনের পার্টি করেছেন! তার কিছু সময় পরই কীভাবে তাঁর মৃত্যু হল, এ নিয়ে দানা বেঁধেছে রহস্য।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, প্রয়াত ওই তরুণের নাম নিলয় কৈলাসভাই প্য়াটেল। আদতে গুজরাটের বাসিন্দা নিলয় আইআইএম-বি -এর দ্বিতীয় বর্ষের পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম (পিজিপি)-এর ছাত্র ছিলেন।
সম্প্রতি ক্যাম্পাসিংয়ের মাধ্যমে একটি চাকরিও জুটিয়ে ফেলেছিলেন নিলয়। সূত্রের দাবি, একটি ফ্যাশন সংক্রান্ত ই-কমার্স ফার্মে চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। সেই কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল সোমবার থেকে!
অথচ, তার ঠিক আগের দিনই নিজের জন্মদিন পালনের পর যেভাবে নিলয়ের দেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে, তাতে হতবাক এবং শোকস্তব্ধ তাঁর সহপাঠী ও শিক্ষকরা।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল সাড়ে ছ'টা নাগাদ প্রথম হস্টেলের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে ক্য়াম্পাসের ভিতর অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে খবর পাঠানো হয়।
কর্তৃপক্ষের তরফে দ্রুত পদক্ষেপ করা হয়। নিলয়কে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায় তারা। কিন্তু, সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে, খুব সম্ভবত জন্মদিনের পার্টির পর রবিবার ভোরে বা সকালে নিজের ঘরে যাচ্ছিলেন নিলয়। সেই সময়েই কোনওভাবে তিনতলা থেকে নীচে পড়ে যান তিনি। তাতেই প্রাণ যায় তাঁর। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এই তত্ত্বে এখনও পর্যন্ত কোনও সিলমোহর পড়েনি।
কর্তৃপক্ষের দাবি, নিলয়ের শরীরে খুব হালকা কিছু কালশিটে দেখা গিয়েছে। কিন্তু, তাঁর শরীরে এমন কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না, যা দেখে মনে হতে পারে, তাঁর সঙ্গে কোনও অপরাধের ঘটনা ঘটেছে।
অন্যদিকে, পুলিশের বক্তব্য হল - নিলয় আত্মহত্যা করেছেন বলে তাদের মনে হচ্ছে না। কারণ, তেমন কোনও প্রমাণ বা সূত্র পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে কোনও সুইসাইড নোটও উদ্ধার করা হয়নি। এবং তাঁর বন্ধুরাও জানিয়েছেন, নিলয় মোটেও কোনও কিছু নিয়ে হতাশ বা বিরক্ত ছিলেন না।
হস্টেলে যাঁরা নিলয়ের সঙ্গে থাকতেন, তাঁরা জানিয়েছেন, নিলয়ের দেহ উদ্ধারের কিছুক্ষণ আগেও জন্মদিন উপলক্ষে অল্প কয়েকজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে চুটিয়ে আনন্দ করেছিলেন তিনি।
এখনও পর্যন্ত এটা স্পষ্ট নয় যে ঠিক কী কারণে নিলয়কে এভাবে আকস্মিক এবং অকালে চলে যেতে হল। কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, তারা নিলয়ের পরিবারের পৌঁছানোর অপেক্ষায় রয়েছে। পরিবারের সদস্যরা এলেই কর্তৃপক্ষের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে এই মামলায় অভিযোগ দায়ের করা হবে।
এ নিয়ে আইআইএম-বি -এর পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি জারি করে শোকপ্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, 'আমরা অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে জানাচ্ছি, ২০২৩-২৫ ব্য়াচের ছাত্র নিলয় কৈলাসভাই প্য়াটেল আর আমাদের মধ্য়ে নেই। তিনি অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিবান ব্যক্তিত্ব ছিলেন। এবং তিনি আইআইবিএম-বি পরিবারের এক অমূল্য সদস্য ছিলেন। এই কঠিন সময়ে আমরা তাঁর পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের পাশে রয়েছি।'