সোনা পাচার মামলায় ধৃত কন্নড় অভিনেত্রী রানিয়া রাওয়ের সংস্থাকে জমি বরাদ্দ করেছিল কর্ণাটকের প্রাক্তন বিজেপি সরকার। এমনটাই দাবি করেছে কর্ণাটক শিল্পাঞ্চল উন্নয়ন বোর্ড। ২০২৩ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের সরকার ১২ একর জমি দিয়েছিল ক্ষিরোদা প্রাইভেট লিমিটেড নামে এক সংস্থাকে। এই সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর রানিয়া রাও। কর্নাটক শিল্পাঞ্চল উন্নয়ন নিগম-এর দেওয়া ওই জমিতে ১৩৮ কোটি টাকা খরচ করে ইস্পাত কারখানা তৈরির প্রতিশ্রুতি দেয় অভিনেত্রীর সংস্থা।
কর্ণাটক শিল্পাঞ্চল উন্নয়ন নিগমের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক জানান, ওই সংস্থার সঙ্গে যোগ রয়েছে সোনা পাচার মামলায় ধৃত অভিনেত্রীর। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ১২ একর জমি বরাদ্দ করা হয় ওই সংস্থার জন্য। ওই কারখানাটি তৈরি হলে সেখানে বহু কর্মসংস্থান হওয়ার কথা বলে জানান কর্ণাটক শিল্পাঞ্চল উন্নয়ন নিগমের আধিকারিক। যদিও সংস্থাকে জমি হস্তান্তর করা হয়ে গিয়েছে কিনা, তা স্পষ্ট করেনি রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন -Uddhav Thackeray: জয় শিবাজি, জয় ভবানী! বিজেপির ‘বাড়বাড়ন্ত’ ঠেকাতে নতুন স্লোগান উদ্ধবের
কর্ণাটক বৃহৎ ও মাঝারি শিল্পমন্ত্রী এমবি পাটিলের দফতর একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সালের একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ক্ষিরোদা ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি কোম্পানিকে সরকার ১২ একর জমি দান করে। তুমাকুরু জেলার সিরসা শিল্পাঞ্চলে এই জমি দেওয়া হয়েছিল। এই কোম্পানির মালিক ছিলেন রানিয়া ও তাঁর ভাই। আর কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে মে মাসে বিধানসভা নির্বাচনের পর। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই জমিতে টিএমটি বার, রড ও অন্যান্য সামগ্রী উৎপাদনের জন্য কারখানার গড়ার প্রস্তাব ছিল। যে কারখানায় রানিয়ারা প্রায় ১৩৮ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জমি আদায় করেছিলেন।পর্ষদের সিইও মহেশ জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি রাজ্যের ১৩৭-তম রাজ্যস্তরীয় সিঙ্গল উইনডো ক্লিয়ারেন্স কমিটি ওই জমির ছাড়পত্র দেয়। কোম্পানি ওই জমিতে টিএমটি বার, রড তৈরির কারখানা গড়ার প্রস্তাব দিয়ে জমি আদায় করে। যাতে প্রকল্প ব্যয় ১৩৮ কোটি টাকা বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন -Uddhav Thackeray: জয় শিবাজি, জয় ভবানী! বিজেপির ‘বাড়বাড়ন্ত’ ঠেকাতে নতুন স্লোগান উদ্ধবের
গত ৩ মার্চ দুবাই থেকে ফেরার পথে বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১২ কোটি টাকার সোনা-সহ গ্রেফতার হন কন্নড় অভিনেত্রী রানিয়া রাও। তিনি কর্নাটকের এক আইপিএস অফিসারের কন্যা। রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের তদন্তকারীদের অনুমান, এই সোনা পাচারচক্রে রানিয়া একা জড়িত নন, নেপথ্যে রয়েছে বড় চক্র রয়েছে। কিন্তু কী ভাবে ওই চক্রের সঙ্গে অভিনেত্রীর যোগাযোগ, তাদের জাল কোথায় কোথায় বিস্তৃত, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।শুধু দুবাই নয়, অভিনেত্রীর পাসপোর্ট খতিয়ে দেখে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, অন্তত ৪৫টি দেশে ভ্রমণ করেছেন তিনি। সূত্রের খবর, জেরায় অভিনেত্রী তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, দুবাই ছাড়াও ইউরোপ, আমেরিকা এবং পশ্চিম এশিয়ার বহু দেশে তিনি যাতায়াত করেছেন। কেন ঘন ঘন এত বিদেশযাত্রা, তাও তদন্ত করে দেখছেন তদন্তকারীরা। সোনা পাচারের এই মামলার তদন্তে নামছে সিবিআইও। রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাও সোনা পাচার মামলায় তথ্যানুসন্ধান শুরু করছে।