Durga Puja 2024: আর একদিন পেরোলেই মহালয়া তিথি। এই মহালয়া তিথি নিয়ে প্রতি বছর সমাজমাধ্যম থেকে চায়ের আড্ডায় একটি বিতর্ক নিয়ত ঘুরপাক খায়। তা হল মহালয়ার শুভেচ্ছা বলে আদৌ কিছু হয় কি না (Mahalaya Wishes Controversy)। মহালয়া আদৌ শুভ না অশুভ ? মহালয়া দিয়েই শুরু হয় বাঙালির সবচেয়ে বড় পার্বণ। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের চণ্ডীপাঠের সুরের সঙ্গে মিশে যেন দিনের আলো প্রবেশ করে ঘরের ভিতর। এত সুন্দর যে দিনের শুরুয়াৎ, এত মঙ্গলময় বলে মনে হয় যে তিথিকে, তা নিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে গেলে কিন্তু রীতিমতো বিতর্কে জড়িয়ে পড়তে হয়। কিন্তু কেন এই বিতর্ক? কারণ এই তিথির পৌরাণিক ব্যাখ্যায় প্রোথিত।
মহালয়ার পৌরাণিক ব্যাখ্যা
মহালয়া (Mahalaya Mythology) তিথিটি একটি বিশেষ পক্ষের অবসান ঘোষণা করে। আর সেই পক্ষটি হল পিতৃপক্ষ। অন্যদিকে এই দিনের দেবীপক্ষের সূচনা হয়। মহালয়ার দিন এই কারণেই গঙ্গার ঘাটে ঘাটে থাকে তর্পণের ভিড়। পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ এই দিন অনেকের বাড়ির রেওয়াজ। বর্তমানে এই রেওয়াজ অনেকটাই কমে গিয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও রেওয়াজটি প্রচলিত রয়েছে। আর এই রেওয়াজই মহালয়ার মূল অর্থ বহন করে। পিতৃপুরুষকে স্মরণ করে এই দিন যারা তর্পণ করেন, তাদের কাছে দিনটি মোটেই আনন্দের নয়। ফলে শুভেচ্ছা বিনিময়ের এই কুশলতা তাদের কাছে অমানবিক মনে হওয়াই স্বাভাবিক। আসলে এই পিতৃতর্পণ প্রিয়জন বিয়োগের শোককে কিছুটা হলেও জাগিয়ে তোলে। তাই কারওর মৃত্যুদিনে যেমন পরিজনদের দিনটির শুভেচ্ছা জানানো অমানবিক, তেমনই আদতে মহালয়ার শুভেচ্ছাও হয়ে উঠতে পারে অসংবেদনশীল।
শুভেচ্ছা জানানো উচিত না অনুচিত ?
মহালয়া (Mahalaya 2024) তিথিটি যে ইতিহাস বহন করে চলেছে এতদিন ধরে, তার থেকে তাঁকে বিচ্যুত করা যায় না। তিথির অর্থ একেকজনের কাছে একেকরকম হতেই পারে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক তিথির অর্থই বদলে যায়। চাপা পড়ে যায় তাঁর পুরনো বা আদি অর্থটি। তা বলে ইতিহাসও বদলে যায় না। ব্যক্তি স্বাধীনতার নিরিখে চাইলে যে কেউ নিজেদের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময়ও করতে পারেন। কিন্তু সমাজ মাধ্যমে সকল বন্ধুদের বিষয়ে ভালোভাবে না জেনে তাঁদের শুভেচ্ছা জানানো অমানবিক হতেই পারে। হতেই পারে সকলের জন্য পোস্ট করার পর পোস্টটি এমন কারও চোখে পড়ল যিনি পিতৃতর্পণ করেন, যার কাছে দিনটি মোটেই আনন্দের নয়। সেক্ষেত্রে বিষয়টি চূড়ান্ত অমানবিক বলেই প্রতিভাত হবে।