অনন্যা গুহর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। তার মধ্যেই ১৭ লাখ টাকা দিয়ে নতুন গাড়ির কিনে ফের নানা কটূক্তির শিকার হলেন নায়িকা। গাড়ি কিনতে যাওয়ার সময় তাঁর পোশাক ইত্যাদি নিয়েও কম চর্চার মুখে পড়তে হয়নি অনন্যাকে। তা নিয়ে অবশ্য তাঁর হবু বর সুকান্ত কুন্ডু নেটিজেনদের খানিক জবাব দিয়েছিলেন। তবে এবার সবটা নিয়ে বেশ কড়া ভাষায় নেটিজেনদের উত্তর দিলেন অনন্যার দিদি অলকানন্দা গুহ।
কী বললেন অলকানন্দা?
অনন্যার গাড়ি কেনার ভিডিয়ো শেয়ার করে দিদি অলকানন্দাকে বলতে শোনা যায়, 'ফেসবুক খুললেই দেখছি বোনুর গাড়ি কেনার ভিডিয়োটা নিয়ে প্রচুর কথা হচ্ছে। ওঁর বয়স ২১ বছর। এই ২১ বছর বয়সেই ও কিন্তু এটা নিয়ে তৃতীয় গাড়ি কিনল। প্রথম গাড়িটা সেকেন্ড হ্যান্ড ছিল। তারপরের গাড়িটা, মানে যেটা কিছুদিন আগে বিক্রি করল, ওটা নতুন ছিল। আর এটাও নতুন অটোমেটিক গাড়ি। কারণ ওঁর পায়ের একটু সমস্যা আছে। ওঁর হাঁটুতে প্রচন্ড ব্যথা হয়, গিয়ার বদলানোর সময়, বা ক্লাচ প্রেস করতে হলে। তাই ও এই ইভি গাড়িটা নিল।'
আরও পড়ুন: ‘উপহারের মতো সন্তান আমাদের জীবনে আসে, আমরা সাদরে গ্রহণ করি…’! মাতৃ দিবসে অকপট ‘মিশকা’ অহনা দত্ত
তবে গাড়ি বিক্রির ছবি দিতে অনেকেই বলেছিলেন যে অনন্যা ইএমআইয়ের টাকা দিতে পারছেন না তাই গাড়িটা বিক্রি করে দিলেন। সেই সব মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে অলকানন্দা বললেন, 'কিন্তু অনেককে কমেন্ট করতে দেখলাম ইএমআই দিতে পারছে না বলে, গাড়িটা চলে গেল। এখানে বলে রাখি ও আগের গাড়িটাও নগদে কিনেছিল আর এটাও। ব্যস এবার আপনারা ফের বলবেন ক্যাশে গাড়ি কিনে নিল। এত টাকা কোথা থেকে আসছে। আসলে এতদিনে আমি এইটুকু বুঝে গিয়েছি যে আমারা যাই করি না কেন, কিছু লোকজনের সমস্যা থেকেই যাবে।'
তবে কেবল গাড়ি কেনা বা বিক্রি নয়, গাড়ি কিনতে যাওয়ার সময় অনন্যার পোশাক নিয়েও নেটিজেনরা নানা নেতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন। অনেকের মতে বর, বাবা, মা ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সামনে তাঁর এই পোশাক পরা উচিত হয়নি। সেই প্রসঙ্গ টেনে অলকানন্দাকে ভিডিয়োতে বলতে শোনা যায়, 'তাছাড়াও দেখলাম অনেকে বোনুর পোশাক নিয়েও নানা মন্তব্য করেছেন। কিন্তু যদি বোনু আশীর্বাদের পর সারাক্ষণ শাড়ি বা চুড়িদার বা ওই জাতীয় ট্র্যাডিশানল পোশাক পরত, তখন আবার এই আপনারাই বলতেন, দেখ কী রকম বাড়িতে বিয়ে হয়েছে, অনন্যাকে দমিয়ে রেখেছে। কী জঘন্য শ্বশুর-শাশুড়ি। আমি একটা জিনিস পুরোপুরি বুঝে গিয়েছি যে, মেয়েরাই কিন্তু মেয়েদের শত্রু। একটা জিনিস তাঁদের মধ্যে কাজ করে যে, আমিও যা পাইনি, ও কেন সেটা পাবে।'
তাঁর কথায়, 'অনেকেই বলছেন কমেন্টে, সমাজে থাকতে হলে সমাজের নিয়মকানুন গুলো মেনে চলতে হবে। কীসের নিয়মকানুন? কে বানিয়েছে এই সব নিয়মকানুন? আসলে কিছু মানুষ যে রকম পরিবেশে বড় হয়ে উঠেছে, সেখানেই এমন ভাবে তাঁদের মাথায় কিছু ধারণা বসিয়ে দেওয়া হয়েছে যে সেটাকেই তাঁরা সমাজের নিয়মকানুন হিসেবে ধরে নিয়েছে। আসলে আপনারা যে বিষয়গুলো নিয়ে কমেন্ট করেছিলেন, সেগুলো নিয়মকানুন নয়, আপনাদের বেড়ে ওঠার সমস্যা। এতে কিন্তু আপনাদেরও কোনও দোষ নেই। আসলে আপনারা যা দেখে এসেছেন, যেগুলো আপনাদের বোঝানো হয়েছে সেগুলোই ভাবতে শুরু করেছেন।'
তবে কেবল এটুকু বলেই থেমে থাকেননি নায়িকা। বাড়িতে গৃহকর্মে স্বামীর স্ত্রীকে সাহায্য করে দেওয়া নিয়েও যে নানা রকমের চর্চা হয় সেই দিকটিও তাঁর ভিডিয়োয় তুলে ধরেছেন। অলকানন্দার কথায়, 'আর একটা কথা বউয়ের কথা শুনলে কেউ ভেড়া হয়ে যায় না। আগে মেয়েরা শুধু ঘরই সামলাতেন। এখন দু'দিকই সামলান। একা হাতে দুটো দিক সামালচ্ছে তাঁরা। সেটা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেন না কেউ। কিন্তু বর বাড়ির কাজে সাহায্য করলে সেটা নিয়ে অনেকে অনেক মন্তব্য করেন। দু'দিক যখন আমরা সামলাচ্ছি, তখন না হয় আমাদের স্বামীরা আমদের একটু সাহায্য করলেনই বা। যদি ছেলেরা বাড়ির একটু কাজ করেন, তাহলে তিনি ভেড়া হয়ে যায় না। মেয়েরা যখন দুটো দিক সামাল দেয় তখন তো তাঁদের আলাদা করে কোনও পুরস্কার দেওয়া হয় না। আমরা কাজ করে যে টাকা অর্জন করি তা নিজেদের জন্য উড়িয়ে দিই না। বরং সেই টাকা দিয়ে আমরা দু'জনেই দু'জনের সংসার চালাই। আর যাঁরা ভুলভাল ভাছেন তাঁরা ভাবতেই পারেন, তাতে আপনাদেরই উন্নতি হবে না।' ভিডিয়োটি পোস্ট করে অলকানন্দা ক্যাপশনে লেখেন, '১৭ লাখ টাকার গাড়ি নিল বোনু তাতে সবার খুর গা জ্বলে গেল।'