কোভিড অতিমারির পর বলে থুতু লাগানোর নিয়মে বদল এনেছিল আইসিসি। তার পর থেকে বোলাররা বলে থুতু লাগাতে পারেন না। বলের পালিশ ঠিক রাখার জন্য তাঁরা অবশ্য কপালের ঘাম লাগাতে পারেন। তবে এবার এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মাঝেই আইসিসির কাছে মহম্মদ শামি আর্জি জানিয়েছেন এই নিয়ম বদলের। শামির অনুরোধ, বলে থুতু লাগাতে দেওয়া হোক। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের মে মাসে করোনা অতিমারির সময় আইসিসি সাময়িক ভাবে বলে লালা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। পরে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এটিকে স্থায়ী ভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
বোলিংয়ের সময় লালার ব্যবহারের জন্য মহম্মদ শামি আইসিসি-কে যে অনুরোধ জানিয়েছেন, তাতে সহমত নিউজিল্যান্ডের তারকা ক্রিকেটার টিম সাউদি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন তারকা ভার্নন ফিল্যান্ডার। তাঁরা এই বিষয়ে শামির পাশে দাঁড়িয়েছেন। পেসারদের একটি বড় অস্ত্র হল রিভার্স সুইং। আর বল একটু পুরনো হয়ে গেলে রিভার্স সুইং ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলে। পাকিস্তানের বোলারেরা প্রথম এই রিভার্স সুইং শুরু করেছিলেন। পরে বিশ্বের অন্যান্য দেশের বোলারেরাও সেই কায়দা রপ্ত করেন। শামিও রিভার্স সুইং ভালো করতেন। বল যত পুরনো হয় তত তার পালিশ নষ্ট হয়। কিন্তু রিভার্স সুইংয়ের জন্য ম্যাচের শুরু থেকে বলের একটি দিকের পালিশ ঠিক রাখতে হয়। তার জন্য বোলারেরা থুতুর ব্যবহার করতেন। আইসিসির নিয়মের জেরে তাতে ব্যাঘাত ঘটেছে। তাই রিভার্স সুইংয়ের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে পেসারদের।
ভারতের তারকা পেসার মহম্মদ শামি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বলে লালা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের করার জন্য আইসিসি-র কাছে আবেদন জানিয়েছেন। শামির মতে, থুতুর ব্যবহারের অনুমতি দিলে বলের রিভার্স সুইং ফেরানো সম্ভব হবে। আর এতে যাতে পেসাররাও সুবিধা পাবেন। সম্প্রতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের চার উইকেটের জয়ের পর শামি বলেন, ‘আমরা রিভার্স সুইং আনার চেষ্টা করছি, কিন্তু বলে সালাইভা ব্যবহারের অনুমতি নেই। আমরা বারবার আবেদন জানাচ্ছি যে, বলে সালাইভা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হোক, যাতে রিভার্স সুইং ফিরে আসে এবং খেলা আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।’
শামির পাশে দাঁড়িয়ে টিম সাউদি বলেছেন, ‘একজন বোলার হিসেবে আমি মনে করি, বোলারদেরও কিছুটা সুবিধে পাওয়া উচিত। আমরা দেখছি যে, ম্যাচগুলি যেভাবে চলছে এবং এই ওডিআই ফরম্যাটে প্রায়ই ৩০০-এর বেশি রান হচ্ছে। ৩৬২ স্কোর হয়েছে নিউজিল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে। আমার মনে হয়, বোলারদের পক্ষেও কিছুটা সুবিধে থাকা দরকার, এবং সালাইভার সামান্য ব্যবহারে যদি বোলারদের সুবিধে হয়, তবে এটি আবার চালু করা যেতেই পারে। আমি বুঝতে পারছি না, কেন আইসিসি এটি ফিরিয়ে আনছে না।’
এই আবেদনে সহমত পোষণ করে সাউদি ইএসপিএন ক্রিকইনফো-কে বলেছেন, ‘এই নিয়ম কোভিডের সময় আনা হয়েছিল। একজন বোলার হিসেবে অবশ্যই এতে কিছুটা সুবিধা পাওয়া যাবে। বর্তমানে একদিনের ক্রিকেটে প্রায়ই ৩৫০ বা তার বেশি রান হচ্ছে। তিনশোর বেশি রান করাটা বর্তমানে স্বাভাবিক হয়ে গেছে। তাই বোলারদের পক্ষেও কিছু সুবিধা থাকা উচিত। যদি সালাইভার সামান্য ব্যবহারে বোলারদের উপকার হয়, তাহলে এটা ফিরিয়ে না আনার কোনও সমস্যা দেখছি না’। সাউদির মতে ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানদের আধিপত্য কমাতে ও বোলারদের কিছুটা সুবিধা দিতে হলে সালাইভা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা দরকার আইসিসির।
ফিল্যান্ডার আবার দাবি করেছেন, ব্যাটিং পিচে বোলারদের সুবিধের জন্য এটাই ফিরিয়ে আনাই যায়। তাঁর মতে, ‘আমরা যদি বলের অবস্থার দিকে তাকাই, আমি বলতে চাইছি, পিছনের প্রান্তের দিকে, এটি সত্যিই ক্ষতবিক্ষত হয়ে থাকে, এবং আমি মনে করি, যদি লালার ব্যবহার করা যায় 9বলের একপাশে পালিশ করতে), তাহলে রিভার্স সুইংয়ের উপাদানটি কার্যকর হতে পারে।’