জিততে হলে শেষ দুই ওভারে দিল্লি ক্যাপিটালসের দরকার ছিল ৩২ রান। টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এই রান করাটা কঠিন কিছু ছিল না। ১৯তম ওভারে সন্দীপ শর্মাকে পিটিয়ে ১৫ রান নেন ত্রিস্তান স্টাবস। শেষ ৬ বলে প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। আবেশ খান বল করতে আসেন ২০তম ওভারে। প্রথম বলে ১ রান হয়। দ্বিতীয় বলে কোনও রান হয়নি। তৃতীয় বলে হয় ১ রান। তিন বলে ২ রান হয়। বাকি তিন বলে দরকার ছিল ১৪ রান। তবে আবেশ শেষ তিন বলে দেন যথাক্রমে ১, ০ এবং ১ রান। ১২ রানে জয় ছিনিয়ে নেয় রাজস্থান রয়্যালস।
বৃহস্পতিবার জয়পুরে ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ঋষভ পন্তকে স্তস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে দেননি রিয়ান পরাগ। এর পরে শেষ ওভারে আবেশের বোলিং ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়। এই নিয়ে পরপর দুই ম্যাচে জয় পেল রাজস্থান রয়্যালস। এদিকে পন্তের প্রত্যাবর্তন একেবারেই সুখের হল না। আইপিএলের ২০২৪ মরশুমের প্রথম দুই ম্যাচেই মুখ থুবড়ে পড়ল দিল্লি ক্যাপিটালস।
প্রথমে রিয়ানের বিধ্বংসী ইনিংসের হাত ধরে লড়াই করার মতো শক্তিশালী জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল রাজস্থান রয়্যালস। ৪৫ বলে ঝোড়ো ৮৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন রিয়ান। তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ৭টি চার এবং ছ'টি ছক্কায়। তাঁর এই ইনিংসই রাজস্থানের পায়ের তলার জমি শক্ত করে।
আরও পড়ুন: ৪-৪-৬-৪-৬-১- শেষ ওভারে নরকিয়াকে পিটিয়ে ছাতু করলেন রিয়ান, জানালেন সাফল্যের রহস্য
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দলের ৩০ রানের মধ্যে যশস্বী জয়সওয়াল এবং সঞ্জু স্যামসনের উইকেট হারিয়ে যখন চাপে রাজস্থান, তখন চারে ব্যাট করতে নামেন রিয়ান পরাগ। রিয়ান নামার পর পরেই দলের ৩৬ রানের মাথায় আউট হয়ে যান জস বাটলারও। ৩ উইকেট হারিয়ে যখন কোণঠাঁসা রাজস্থান, তখন দলের হাল শক্ত হাতে ধরেন রিয়ান। শুরু থেকেই তিনি আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন। ৩৪ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন। বাকি ১১ বলে রিয়ান করেন ৩৪ রান। তাঁর মধ্যে শেষ ওভারে নেন ২৫ রান। ১৯ ওভারে রাজস্থান রয়্যালসের যেখানে সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেটে ১৬০ রান। শেষ ওভারে এনরিখ নরকিয়াকে পিটিয়ে ৪-৪-৬-৪-৬-১- মোট ২৫ রান নেন রিয়ান। আর ১৬০/৫ থেকে এক লাফে রাজস্থানের স্কোর পৌঁছে যায় ৫ উইকেটে ১৮৫-তে। তাঁর সৌজন্যেই দিল্লির বিরুদ্ধে বড় অক্সিজেন পেয়ে যায় রাজস্থান।
আরও পড়ুন: মুজিবের পরিবর্তে ১৬ বছরের আফগান স্পিনারকে নিল KKR, RR-এ প্রসিধের বদলি কেশব মহারাজ
বৃহস্পতিবার দিল্লির বিরুদ্ধে রাজস্থানের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর করেছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তিনি ১৯ বলে ২৯ করেছেন। এছাড়া ১২ বলে ২০ করেছেন ধ্রুব জুরেল। শিমরন হেতমায়ের ৭ বলে ১৪ করে অপরাজিত থাকেন। তবে এদিন ফের নিরাশ করেছেন যশস্বী জয়সওয়াল। তিনি ওপেন করতে নেমে ৭ বলে মাত্র ৫ করে আউট হয়ে যান। খেলতে পারেননি সঞ্জু (১৪ বলে ১৫ রান) এবং বাটলারও (১৬ বলে ১১ রান)। তবে সব খামতি দায়িত্ব নিয়ে পূরণ করে দিয়েছেন রিয়ান পরাগ।
জবাবে রান তাড়া করতে নেমে দিল্লি ক্যাপিটালসের শুরুটাও ভালো হয়নি। দলের ৩০ রানের মধ্যে পরপর দুই উইকেট হারায় ক্যাপিটালস। মিচেল মার্শ (১২ বলে ২৩ রান) এবং রিকি ভুই (২ বলে শূন্য রান) দ্রুত সাজঘরে ফিরে গেলে হাল ধরেছিলেন ওয়ার্নার। তাঁকে কিছুটা সঙ্গত করার চেষ্টা করেন ঋষভ পন্ত। কিন্তু ৩৪ বলে ৪৯ করে আউট হয়ে যান ওয়ার্নার। পন্তও এর পর বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে পারেননি। তিনি ২৬ বলে ২৮ করে আউট হন। নিজের ১০০তম ম্যাচে ব্যাট হাতে পন্ত উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেননি পন্ত। এমন কী আগের ম্যাচে দলকে ভরসা জোগানো অভিষেক পোড়েলও এদিন নিরাশ করেন। ১০ বলে ৯ করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
এই পরিস্থিতিতে দলের হাল ধরেন ত্রিস্তান স্টাবস। তাঁকে সঙ্গত করেন অক্ষর প্যাটেল। এই দুই প্লেয়ারের হাত ধরে লড়াইয়ে ফেরে দিল্লি। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ৩টি ছক্কা এবং ২টি চারের হাত ধরে ২৩ বলে ৪৪ করে অপরাজিত থাকেন স্টাবস। ১৩ বলে অপরাজিত ১৫ রান অক্ষরের। তবে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রান করে দিল্লি। রাজস্থানের হয়ে দু'টি করে উইকেট নিয়েছেন নান্দ্রে বার্গার এবং যুজবেন্দ্র চাহাল। আইপিএলে এই নিয়ে প্রথম ন'টি ম্যাচেই হোম দল জয় পেল। অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে গিয়ে এবার এখনও পর্যন্ত কোনও দল জয় পায়নি।