আজাদ মল্লিক ওরফে আজাদ হোসেন ওরফে আহমেদ হোসেন আজাদ যে শুধুমাত্র জাল পাসপোর্ট চক্রের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন, তাই নয়। তিনি জাল ভিসাও তৈরি করতেন! তদন্তে নেমে একথা জানতে পেরেছেন ইডি আধিকারিকরা। আজ (মঙ্গলবার - ১৩ মে, ২০২৫) আদালতে একথা জানিয়েছেন ইডি-র আইনজীবী।তদন্তে উঠে এসেছে, ভিসা জাল করার ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু দেশকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন আজাদ। মূলত যে সমস্ত দেশে ভারতীয়দের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ম বলবৎ রয়েছে, সেই সব দেশের জন্যই জাল ভিসা তৈরি করে দিতেন আজাদ! এর পাশাপাশি দুবাই, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়ার মতো দেশের জন্যও জাল ভিসা বানিয়ে দিতেন তিনি।উল্লেখ্য, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে উত্তর ২৪ পরগনার বিরাটি থেকে আজাদকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। কিন্তু, পরে জানা যায়, তিনি আদতে পাকিস্তানের নাগরিক। কিন্তু, দীর্ঘদিন বাংলাদেশের থাকার পরই ভারতে ঢুকেছিলেন এবং তাঁর নথি জালচক্রে বহু বাংলাদেশি এজেন্টও রয়েছেন। এমনকী, তিনি হাওয়ালার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ বাংলাদেশে পাচার করতেন বলেও তদন্তে উঠে আসে।পরবর্তীতে আজাদকে যখন জেরা করা হয়, তখন তাঁর ভাবভঙ্গি দেখে সন্দেহ হয় ইডি আধিকারিকদের। তিনি যেভাবে নানা প্রশ্ন অত্যন্ত সাবলীলভাবে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলেন, তাতে তিনি পাকিস্তানি বা আইএসআই চর কিনা, সেই সন্দেহও দানা বেঁধেছে ইতিমধ্য়েই। যে কারণে আজাদকে জেরা করতে শুরু করেছেন এনআইএ গোয়েন্দারাও।আর, এরই মধ্যে ইডি আদালতে জানাল, আজাদ শুধুমাত্র পাসপোর্ট নয়, জাল ভিসা তৈরির চক্রের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। এসব করে কোটি কোটি টাকা রোজগার করতেন তিনি। এখনও পর্যন্ত অন্তত ৫০ কোটির এমন লেনদেনের হদিশ গোয়েন্দারা পেয়েছেন, যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আজাদের নাম। তাঁর কাছ থেকে নৈহাটি বিধানসভা এলাকা এবং রাজারহাট-গোপালপুর বিধানসভা এলাকার দু'টি ভোটার কার্ডও উদ্ধার করা হয়েছে।গোয়েন্দাদের হাতে আসা তথ্য বলছে, নথি জালের কারবার করতে গিয়ে রীতিমতো একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করে ফেলেছেন আজাদ। যা অত্যন্ত পেশাদারভাবে গত প্রায় ১০ বছর ধরে সক্রিয় রয়েছে!