বিজেপি মহিলাদের সম্মান দেয় না। এই অভিযোগ বরাবর তুলে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্য–রাজনীতিতে। আর বিজেপি নেতা–মন্ত্রী–সাংসদরাও এমন নানা মন্তব্য করে ফেলছেন যার জেরে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী কুনওয়ার বিজয় শাহ কর্ণেল সোফিয়া কুরেশিকে ‘জঙ্গিদের বোন’ বলে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন। যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও হয়। আর মন্ত্রীকে ভর্ৎসনাও করা হয়। কিন্তু তারপরও বিজেপি এতটুকু শোধরায়নি বলেই অভিযোগ। কারণ বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ রামচন্দ্র জাংরা মহিলা পর্যটকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন।
এদিকে বিজেপির এই রাজ্যসভার সাংসদের মন্তব্য তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে গোটা দেশের রাজনীতিতে। নিহতের মধ্যে তিনজন বাংলার পর্যটকও ছিলেন। সেখানে এবার পহেলগাঁও হামলার সময় উপস্থিত মহিলা পর্যটকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন বিতর্কে জড়ালেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ রামচন্দ্র জাংরা। বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াই করা উচিত ছিল মহিলাদের। তাহলে হতাহতের সংখ্যা আরও কম হতো। সিঁদুরধারিণীদের লড়াই করা উচিত ছিল। তাহলে ওদের সামনে ওদের স্বামীকে এভাবে জঙ্গিরা গুলি করে মারতে পারত না।’ এই মন্তব্যের পরই গর্জে উঠেছেন বাংলার অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
আরও পড়ুন: স্বামীর পরকীয়া সম্পর্কের প্রতিবাদ, স্ত্রীকে মারধর করে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন উত্তর দিনাজপুরে
মহিলাদের সম্পর্কে এমন মন্তব্য করার জন্য তোপ দেগেছেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। কিন্তু বিজেপি নেতা–মন্ত্রী–সাংসদরা কিছুতেই এমন সব বিতর্কিত মন্তব্য থেকে বিরত থাকছেন না। জঙ্গিদের সামনে নিরস্ত্র মহিলারা কেমন করে লড়াই করবেন? আর নিরস্ত্র মহিলারা লড়াই করলে মৃত্যু সংখ্যা কমতো কেমন করে? এমন সব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাই চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘এভাবে মহিলা সিঁদুরের অমর্যদা করবেন না। আমরা এটার তীব্রভাবে ধিক্কার জানাই। মহিলা আছে বলে আপনি সূর্যের আলো দেখেছেন। তাই তাঁদের অপমান করার অধিকার আপনাকে কেউ দেয়নি।’
পহেলগাঁওয়ে পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ গিয়েছিল ২৬ জনের। তার পর জবাব দেওয়া হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান করে। এমনকী পাকিস্তানের মুখোশ বিশ্বের দরবারে খুলে দিতে বহুদলীয় সাংসদরা নানা দেশে পাড়ি দিচ্ছেন। সেখানে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদের এমন মন্তব্য গোটা দেশে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। যেখানে পহেলগাঁও হামলার পর ভারতের পাল্টা প্রত্যাঘাতে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি। তার মধ্যে জইশ–ই–মহম্মদ, লস্কর–ই–তৈবার হেডকোয়ার্টারও আছে। মৃত্যু হয় শতাধিক জঙ্গির। সেখানে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ রামচন্দ্র জাংরা এমন মন্তব্য করলেন কেমন করে? উঠছে প্রশ্ন।