স্বামী পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছে। এটা জানতে পারে স্ত্রী। অন্যের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে স্বামী জড়িয়ে পড়েছে জানতে পেরে প্রতিবাদ করেন তিনি। তার জেরেই স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করে স্বামী বলে অভিযোগ। এমনকী গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। পাঁচ বছর আগে উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া ব্লকের নয়াবাড়ির বাসিন্দা রহমান আলির মেয়ের সঙ্গে ফাঁসিদেওয়া ব্লকের চটহাট অঞ্চলের তুফান ডাংগি গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ বশিরের ছেলে হাসিবুলের বিয়ে হয়। শুরুতে সব ঠিকই ছিল। সুখের সংসারে একটি পুত্র ও কন্যা সন্তান হয়।
সুখের সংসারে তাল কাটে হাসিবুলের জীবনে আর এক বধূ আসায়। পরকীয়া প্রেমে হাসিবুল নিজের স্ত্রীর উপর নির্যাতন করতে শুরু করে। ওই বিবাহিত যুবতীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে হাসিবুল সংসারকে অবহেলা করতে শুরু করে। স্ত্রীর সামনেই সে ফোনে ওই বধূর সঙ্গে কথা বলে চলত বলে অভিযোগ। গোটা ঘটনা জানতে পেরে হাসিবুলের স্ত্রী ওই বধূর সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে নিষেধ করেন। এটাই সহ্য করতে না পেরে হাসিবুল খুন করে নিজের স্ত্রীকে। আর ঝুলিয়ে দেয় দড়ি দিয়ে। তখন স্থানীয় বাসিন্দারা এসে দেখেন ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে হাসিবুলের স্ত্রী। তখন তাঁকে উদ্ধার করে ফাঁসিদেওয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। আর এই ঘটনায় ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিশ আসেন।
আরও পড়ুন: সুকান্তর স্ত্রীর দুটি ভোটার কার্ড নিয়ে জেপি নড্ডাকে নালিশ, প্রকাশ্যে গোষ্ঠীকোন্দল
এই পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। হাসিবুলকে বারবার বলা সত্ত্বেও পরকীয়া সম্পর্ক থেকে সরিয়ে আনা যায়নি। বরং গভীরভাবে জড়িয়ে পড়ে হাসিবুল। স্ত্রী নানাভাবে স্বামীকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও কোনও ফল হয়নি। এই কথা শুনে স্বামী হাসিবুল বেধড়ক মারধর করেন স্ত্রীকে। এই ঘটনার পর মৃত স্ত্রীর দুই সন্তান পাশের বাড়িতে গিয়ে প্রতিবেশীদের জানায়, তাদের মা এখনও ঘুম থেকে ওঠেনি। পরে জানা যায় স্ত্রীকে মারধর করার পর গলায় দড়ি পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছে স্বামী হাসিবুল। তবে ঘরের জানলা দিয়ে চম্পট দেয় স্বামী হাসিবুল।
এই খবর জানতে পারে হাসিবুলের স্ত্রীর পরিবার। খবর পেয়ে ছুটে আসে পরিবারের লোকজন। মহম্মদ হাসিবুলের বিরুদ্ধে স্ত্রীর পরিবার ফাঁসিদেওয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। পরে ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিশ মহম্মদ হাসিবুলকে খুঁজে বের করে গ্রেফতার করে। আজ, রবিবার ধৃতকে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তোলা হয়। থানাতে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মৃতদেহ তদন্ত করে পুলিশ রিপোর্ট জমা দেয়। ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় দেহ। পরিবারের দাবি, দোষী হাসিবুলের অবিলম্বে কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হোক।