মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা তথা স্থানীয় কাউন্সিলর দুলাল সরকার ওরফে বাবলা সরকারের খুনের ঘটনা নিয়ে এবার শাসকদলের স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশকে তোপ দাগলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। প্রশ্ন তুললেন তাঁদের 'লজ্জা-শরমবোধ' নিয়ে! এমনকী, জেলা প্রশাসনের আমলাদেরও নিশানা করতে ছাড়লেন না তিনি।
কোন প্রেক্ষিতে তোপ দাগলেন সুকান্ত?
সোমবার নিজের ভেরিফায়েড এক্স অ্য়াকাউন্ট থেকে পোস্ট করেছেন সুকান্ত মজুমদার। ইংরেজিতে লেখা সেই পোস্টে প্রথমেই তৃণমূল কংগ্রেসকে 'নির্লজ্জ' শব্দের সমার্থক বলে তীব্র ধিক্কার জানিয়েছেন তিনি।
কারণ, সুকান্তর দাবি অনুসারে, এই পোস্টের সঙ্গে ১ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের যে ভিডিয়োটি তিনি শেয়ার করেছেন, তা মালদা জেলায় আয়োজিত একটি মেলার।
সুকান্তর বক্তব্য, দুলাল সরকার খুন হওয়ার পর সবেমাত্র তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। তারপর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই মহা জাঁকজমক করে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সেই মেলায় সেইসব তৃণমূল নেতাকে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে, যাঁরা দুলাল সরকারের শেষ যাত্রায় গভীর দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন!
সুকান্তর ইঙ্গিত খুবই স্পষ্ট, দলীয় সহকর্মীকে হারানোর দুঃখ কীভাবে এত দ্রুত ভুলে গেলেন ওই তৃণমূল নেতারা? যে, দুঃখ ভুলে হাসিমুখে মেলা, নাচ-গানের অনুষ্ঠানের মঞ্চে অংশ নিলেন তাঁরা? এমনকী, প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করলেন!
শাসকদলের নেতাদের এই আচরণের কারণেই তৃণমূলকে 'নির্লজ্জ' বলেছেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি লেখেন, এই ঘটনায় নিহত দুলাল সরকারের স্ত্রী গভীর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন। তারপরও জেলার শাসকদলের নেতারা কীভাবে এই ধরনের আনন্দ-অনুষ্ঠানে হাসিমুখে যোগ দিতে পারেন?
সুকান্ত তাঁর পোস্টে আরও জানিয়েছেন, এই মেলা কোনও সরকারি অনুষ্ঠান নয়। বরং, এটি একটি বেসরকারি স্কুলের তরফে আয়োজন করা হয়েছিল। যে স্কুলের মালিক রিজাউল করিম বক্সি। যিনি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আবদুর রহিম বক্সির ছেলে।
এমন একটি বেসরকারি আয়োজনে কেন জেলাশাসক এবং জেলার দুই বিধায়ক তথা মন্ত্রী যোগ দিলেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন সুকান্ত। তাঁর তীর্যক বার্তা, মেলার সেই মেগা মঞ্চে শাসকদলের একাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। অথচ, সেই দলকেই জেলায় যিনি প্রতিষ্ঠা দিয়েছিলেন, সেই দুলাল সরকার ওরফে বাবলা সরকার আজ আর তাঁদের মধ্যে নেই!
সবশেষে সুকান্ত লিখেছেন, বাবলার সরকারের স্ত্রী ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরেই অনেকে হয়তো অনেক কিছু জানেন (বাবলা সরকারের খুন নিয়ে)! তৃণমূল নেতাদের আচরণ দেখে তাঁর সেই দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন সুকান্ত মজুমদার। তাঁর মতে, '... এটা আসলে পুরোটাই একটা চক্রান্ত!'