একই এপিক নম্বরে একাধিক কার্ড রয়েছে। আর তা দিয়ে ভোটে কারচুপি করা হতে পারে। ভূতুড়ে ভোটার বাতিল করতে হবে। এমনই সব দাবি তুলেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। আর তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দড়ি টানাটানি এখনও অব্যাহত। এই আবহে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের স্ত্রী কোয়েল মজুমদারের দু’জায়গায় ভোটার কার্ড রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর তা নিয়ে বিতর্ক চরমে উঠেছে। এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তি বাড়ল বিজেপির। এই আবহে এবার সামনে চলে এল গোষ্ঠীকোন্দলও। বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের পক্ষ থেকে এক সদস্য সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ জানালেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার কাছে। যা নিয়ে এখন চর্চা তুঙ্গে।
বিজেপি ভোটার তালিকায় কারচুপি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল আগে। সেখানে দেখা যাচ্ছে খোদ বিজেপিরই রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের স্ত্রীর বিরুদ্ধে দু’জায়গায় ভোটার কার্ড রয়েছে বলে অভিযোগ। সুতরাং তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপির তোলা অভিযোগ মিথ্যে বলেই প্রমাণ হচ্ছে। বরং তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ সত্যতা পাচ্ছ। এই আবহে ভোটার তালিকাকে ইস্যু করে তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করতে আসা বিজেপি এখন কার্যত চাপে পড়ে গিয়েছে। এখানেই বিজেপির একাংশের প্রশ্ন, এতদিন কেন কোয়েল মজুমদারের নাম বাদ দেওয়া হয়নি? এখন কি শাসকদলকে আর নিশানা করা যাবে? সুকান্তের ঘটনায় এখন বিভক্ত বিজেপি বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: রাধাবিনোদ পালের নামে রাস্তা চাই কলকাতায়, মুখ্যমন্ত্রী–মেয়রের সঙ্গে কথা বলবেন অভিষেক
শুধু তাই নয়, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিজেপির অন্দরে গোষ্ঠীকোন্দল দেখা দিয়েছে। বঙ্গ বিজেপিতে সুকান্ত বিরোধী শিবির এই গোষ্ঠীকোন্দলকে প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে। বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের পক্ষ থেকে এক সদস্য সামশুর রহমান এই ঘটনাটি নিয়ে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাকে চিঠিও লিখে ফেলেছেন। দলের রাজ্য সভাপতির স্ত্রীর দু’জায়গায় ভোটার কার্ড আছে বলে ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকী এই কাজের জেরে বিজেপি অস্বস্তিতে পড়েছে বলেও নড্ডাকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করেন সামশুর। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে কদিন আগে সুকান্তর স্ত্রী কোয়েলের নাম বালুরঘাট এবং জলপাইগুড়ি দুই জায়গার ভোটার তালিকায় আছে বলে অভিযোগ জমা পড়েছে।
এই নিয়ে সুকান্ত মজুমদার কোনও কথা বলছেন না। কিন্তু বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতিকে দলের এক সদস্য চিঠি লিখে অভিযোগ করার ফলে সুকান্ত মদুমদারের রিপোর্ট খারাপ হল। তার উপর এমন অভিযোগ পেতেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এটাও সুকান্তকে চাপে ফেলার জন্য যথেষ্ট। তৃণমূল কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে, দু’জায়গায় ভোটার তালিকায় স্ত্রীর নাম কেমন করে করা হয়েছে? নির্বাচনে কারচুপি করার জন্যই কি এমন পদক্ষেপ? এই সব প্রশ্ন উঠলেও বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদের সাফাই, রাজ্য প্রশাসনের ইচ্ছা অথবা অনিচ্ছাকৃত গাফিলতিতেই এমন ঘটনা ঘটেছে।