বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন তরুণী। তাঁর পরিবার বিষয়টি মেনে নিলেও প্রতিবেশীরা মেনে নিতে পারেননি। তারপর থেকেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও প্রতিবেশীরা ওই পরিবারের উপর অত্যাচার শুরু করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শেষপর্যন্ত গোটা পরিবারকে গ্রাম ছাড়া করা হয় বলে অভিযোগ। প্রায় দু’বছর ধরে গ্রাম ছাড়া রয়েছে পরিবারটি। ঘটনাটি মালদার ইংরেজবাজার ব্লকের কাজিগ্রামের। ফলে বাধ্য হয়ে সেখানকার এক বাসিন্দা নিজের পরিবারকে নিয়ে দু’বছর ধরে বাইরে ঘরভাড়া করে থাকছেন। এই নিয়ে তিনি একাধিকবার পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু, কোনও কাজ হয়নি।
আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদে খুন হওয়া বাবা-ছেলের বাড়িতে তৃণমূল, শিশুদের পড়ার দায়িত্ব চান সাংসদ
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য জয়ন্ত সরকারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন ওই ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ, বাড়ি দখল করার উদ্দেশ্যেই ষড়যন্ত্র করেছেন পঞ্চায়েত সদস্য। গ্রামের বাসিন্দাদের একত্রিত করে ঘরছাড়া করিয়েছেন। ওই ব্যক্তির অভিযোগ, তিনি এ বিষয়ে ইংরেজবাজার থানা অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু, কোনও কাজ হয়নি। শেষপর্যন্ত পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছেন।
অভিযোগকারীর দাবি, প্রায় ৪০ বছর ধরে গ্রামের পূর্ত দফতরের জায়গায় বসবাস করছেন তিনি। ওই ব্যক্তি পেশায় টোটোচালক। তাঁর বাড়ির পাশেই ক্লাব রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ছোট মেয়ে দু'বছর আগে বাড়ি থেকে পালিয়ে নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করেন। সেই অজুহাতে তাঁদের ওপর অত্যাচার শুরু হয়। আরও অভিযোগ, প্রতিবেশীরা তাঁদের মারধর করছেন। এতে মদত দিয়েছেন জয়ন্ত সরকার। ভয়ে ঘরছাড়া হতে হয় তাঁদের। থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু, কোনও কাজ হয়নি।
ওই ব্যক্তির স্ত্রী জানান, কোনও দোষ না করা সত্ত্বেও বৃদ্ধ স্বামী ছেলেকে নিয়ে তাঁদের ঘরছাড়া হতে হয়েছে। থানা কোনও কাজ করছে না। এখন ঘরে ফিরতে চাইছেন তিনি।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জয়ন্ত সরকার। তিনি পাল্টা ওই ব্যক্তির বাড়িতে অসামাজিক কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, গ্রামবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে এর প্রতিবাদ করেছ। এই ঘটনায় তিনি নিজেই তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব জানিয়েছেন, অভিযোগ পাওয়ার পর পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনায় তদন্ত করা হচ্ছে। এদিকে, ঘটনাটি সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এ বিষয়ে স্থানীয় বিজেপির নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূল নেতারা আইন নিজেদের হাতে তুলে নিচ্ছেন। অন্যের বাড়ি দখল করছেন। সাধারণ মানুষ যখন আইন হাতে তুলে নেবেন তখন বুঝতে পারবেন এই নেতারা। তৃণমূলের বক্তব্য, আইন আইনের পথে চলবে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।