রাজস্থানের জয়সলমীরের পর এবার পাঞ্জাবের অমৃতসর। নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদের মধ্যে উত্তেজনার আবহে পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগে দু’জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে পাঞ্জাব পুলিশ। জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরেই পাঞ্জাবজুড়ে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। সেই অভিযানে পুলিশের কাছে খবর আসে দুই ব্যক্তি সেনাছাউনি, বায়ুসেনার ঘাঁটি এবং সেনাদের গতিবিধি সম্পর্কে সমস্ত তথ্য ও ছবি পাচার করছে পাকিস্তানে। এরপরেই অমৃতসর গ্রামীণ পুলিশ পলক শের মসীহ এবং সুরজ মসীহকে গ্রেফতার করে। (আরও পড়ুন: বাগলিহার বাঁধ দিয়ে চেনাবের জল প্রবাহ কমাল ভারত, পাকিস্তানে হাহাকার শুরু হল বলে)
আরও পড়ুন-পহেলগাঁও-কাণ্ডের আবহে বড় দুর্ঘটনা! কাশ্মীরে গভীর খাদে সেনার গাড়ি, মৃত ৩ জওয়ান
এক্স হ্যান্ডলে ডিজিপি গৌরব যাদব জানান, 'প্রাথমিক তদন্তে ধৃতদের সঙ্গে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার যোগ মিলেছে।হরপ্রীত সিং ওরফে পিট্টু ওরফে হ্যাপি নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগ রয়েছে পাক গুপ্তচর সংস্থার। হরপ্রীতই ওই দু’জনকে চরবৃত্তির কাজে লাগিয়েছিল। আগেই চরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন হরপ্রীত। সে এখন অমৃতসর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি। শনিবার পলক শের মসীহ এবং সুরজ মসীহকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ১৯২৩ সালের সরকারি গোপনীয়তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। তদন্ত চলাকালীন আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করা হবে।' তিনি আরও বলেন, 'পাঞ্জাব পুলিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে, জাতীয় স্বার্থ রক্ষার দায়িত্বে অবিচল রয়েছে। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন করার যে কোন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে দৃঢ় এবং তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' জানা গিয়েছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশে গিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর গতিবিধির ওপর নজর রাখছিল ধৃতরা। অভিযোগ, লুকিয়েই সেনা ছাউনির ছবিও তুলেছিল তারা। এভাবেই পাকিস্তানে তথ্য পাচার করছিল ধৃতরা। এই ঘটনার নেপথ্যে আইএসআই যোগের সম্ভবনা রয়েছে বলে মনে করছে গোয়েন্দারা। (আরও পড়ুন: যুদ্ধ যুদ্ধ রব উঠেছে বাংলাদেশে, এই নিয়ে মুখ খুললেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা)
আরও পড়ুন: ভারত নিয়ে ‘অবস্থান বদল’ মলদ্বীপের মুইজ্জুর,চিনের বেস্টফ্রেন্ড এখন ভারতের ঘনিষ্ঠ?
এর আগে গত সপ্তাহে, আমৃতসর কমিশনারেট পাঞ্জাব সীমান্তে আইএসআই-সমর্থিত বাব্বর খালসা ইন্টারন্যাশনালের সন্ত্রাসবাদী মডিউলের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছিল, যারা গ্রেনেড হামলার ছক কষছিল বলে অভিযোগ। ধৃতরা হলেন নরেশ কুমার ওরফে বাব্বু, অভিনব ভাগত ওরফে অভি, অজয় কুমার ওরফে আজ্জু, সানি কুমার (সকলেই আমৃতসরের হরিপুরা এলাকার বাসিন্দা), এবং একজন ১৭ বছরের কিশোর।তদন্তে উঠে এসেছে, গ্যাংস্টার জিওয়ান ফৌজি এই মডিউলটি পরিচালনা করছিল। ধৃতদের আজনালা সেক্টর থেকে অস্ত্রের চালান সংগ্রহ করার দায়িত্ব দোয়া হয়েছিল। পুলিশের দল একটি হ্যান্ড গ্রেনেড, দেশীয় তৈরি .৩২ ক্যালিবারের পিস্তল ও পাঁচ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন-পহেলগাঁও-কাণ্ডের আবহে বড় দুর্ঘটনা! কাশ্মীরে গভীর খাদে সেনার গাড়ি, মৃত ৩ জওয়ান
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের হয়ে চরবৃত্তির অভিযোগে দু’দিন আগেই রাজস্থানে পঠান খান নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর সঙ্গে অমৃতসরে ধৃত দু’জনের কোনও যোগসূত্র রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর, ২০১৩-য় পাকিস্তান গিয়ে আইএসআই-র সঙ্গে যোগাযোগ হয় পাঠান খানের। পাকিস্তানে ট্রেনিং নিয়ে ভারতে ফিরেই শুরু গুপ্তচরবৃত্তি। তার বিরুদ্ধে জয়সলমীরের সীমান্ত নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচারের অভিযোগ রয়েছে। প্রায় ১ মাস ধরে দফায় দফায় জেরার পরে তাকে গ্রেফতার করেন গোয়েন্দারা।