ছত্তিশগড়ের বস্তারে সাংবাদিক এবং ইউটিউবার মুকেশ চন্দ্রকর হত্যা মামলায় মূল অভিযুক্ত সুরেশ চন্দ্রকরকে গ্রেফতার করল সিট। হায়দরাবাদ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে এই খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের নাম রীতেশ চন্দ্রকর, দীনেশ চন্দ্রকর ও মহেন্দ্র রামতেক। তারা সকলেই মুকেশের আত্মীয়। ধৃত সুরেশও মুকেশের আত্মীয়।
আরও পড়ুন: বেআইনি নির্মাণ নিয়ে লাগাতার খবর করেছিলেন, সেই সাংবাদিক ‘খুনে’ ধৃত ৩ সন্দেহভাজন
জানা গিয়েছে, সুরেশ চন্দ্রকর পেশায় একজন ঠিকাদার। তিনি আবার কংগ্রেসের সদস্য। প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, মুকেশ একটি দুর্নীতির মামলা ফাঁস করেছিলেন। তারফলে সুরেশ তাঁকে খুনের ছক কষেছিল। বিষয়টি জানাজানি হয় ৩ জানুয়ারি। তারপর থেকেই সুরেশ চন্দ্রকরকে খুঁজছিল সিট। এরপর সিটের সদস্যরা হায়দরাবাদে হানা দিয়ে রবিবার গভীর রাতে সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করে। ৩৩ বছর বয়সি মুকেশ চন্দ্রকর একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ছিলেন। গত ১ জানুয়ারি তিনি নিখোঁজ হন। ৩ জানুয়ারি, বিজাপুর শহরের ছাতনপাড়া বস্তিতে সুরেশ চন্দ্রকরের সম্পত্তিতে অবস্থিত একটি সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে মুকেশের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, সুরেশ চন্দ্রকর হায়দরাবাদে তার ড্রাইভারের বাড়িতে লুকিয়ে ছিল। তাকে ধরার জন্য, পুলিশ ২০০টিরও বেশি সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে এবং প্রায় ৩০০টি মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করে। সুরেশ চন্দ্রকরকে এখন জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিট। এর আগে সুরেশ চন্দ্রকরের চারটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার অবৈধভাবে তৈরি ইয়ার্ডও ভেঙে ফেলা হয়। সুরেশ চন্দ্রকরের স্ত্রীকেও কাঙ্কের জেলা হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, মুকেশ এনডিটিভি সহ বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেলে সাংবাদিকতা করেছেন। তিনি বস্তার অঞ্চলে নির্ভীক সাংবাদিকতার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। জানা যায়, সম্প্রতি তিনি বিজাপুরে একটি রাস্তা নির্মাণ কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস করেছিলেন। স্থানীয় ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির পর্দা ফাঁস করেছিলেন। তার জেরেই তাঁকে খুন করা হয় বলে অনুমান পুলিশের।
পুলিশ জানায়, মুকেশ গত ১ জানুয়ারি স্থানীয় এক ঠিকাদারের কাছ থেকে ফোন পেয়ে রায়পুরের এক সাংবাদিককে বৈঠকের কথা জানান। পরে তিনি নিখোঁজ হন। ঘটনায় তাঁর ভাই যুগেশ একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেই ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ মুকেশের মৃতদেহ উদ্ধার করে।
ঘটনায় শোক প্রকাশ করে ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছিলেন, ‘তরুণ ও নিবেদিতপ্রাণ সাংবাদিক মুকেশ চন্দ্রকর হত্যার খবর দুঃখজনক। অপরাধীকে রেহাই দেওয়া হবে না।’ বস্তার সাংবাদিকরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে। তাঁরা সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।