প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং শুধুমাত্র মিতভাষী এবং নম্রই ছিলেন না, তিনি তাঁর কর্মজীবনে উদার মানসিকতারও পরিচয় দিয়ে গিয়েছেন। ২০০৫ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বাম-সমর্থিত পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন মনমোহন। সে ঘটনায় পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত ছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, তাদের প্রতি নম্র আচরণ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর প্রয়াণে ফের উঠে এসেছে সেই প্রসঙ্গ।
আরও পড়ুন: 'ইতিহাস আমার প্রতি সদয় হবে', মিডিয়ার ওপর যখন 'অভিমান' করেছিলেন মনমোহন
একটি অনুষ্ঠানের জন্য ২০০৫ সালে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (জেএনইউ) গিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। সেই সময় তাঁকে ঘিরে কালো পতাকা দেখিয়েছিলেন বাম-সমর্থিত ছাত্ররা। এই ঘটনার পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে তাদের মধ্যে কয়েকজনকে আটক করেছিল দিল্লি পুলিশ। তার একদিন পরেই বিষয়টি জানতে পেরে মনমোহন তৎকালীন উপাচার্য বিবি ভট্টাচার্যকে ছাত্রদের প্রতি নম্র আচরণ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি বলেছিলেন মৃত্যু পর্যন্ত বলার অধিকার রক্ষা করে যাবেন।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সেই সময় বলেছিলেন, প্রত্যেকের বলার অধিকার আছে। আর এই প্রতিষ্ঠানকে একটি উদার প্রতিষ্ঠান হিসেবে নজির তৈরি করতে হবে। একজন অবসরপ্রাপ্ত জেএনইউ অধ্যাপক এই ঘটনার পর তৎকালীন উপাচার্যকে ফোন করে মনমোহন বলেছিলেন, প্রতিবাদ করা তাদের অধিকার। তাই ছাত্রদের প্রতি যেন নমনীয় ব্যবহার করা হয়। পরে ছাত্রদের সতর্ক করার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে রাষ্ট্রদ্রোহ নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিল জেএনইউ। সেই সময় একটি সাক্ষাৎকারে মনমোহনের সেই পদক্ষেপের কথা জানিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। প্রাক্তন উপাচার্য বলেছিলেন, ‘মনমোহন সিং আমাকে বলেছিলেন দয়া করে নম্র হন, স্যার। আমি বলেছিলাম আমাকে অন্তত তাদের সতর্ক করতে হবে।’ প্রাক্তন জেএনইউ ছাত্র নেতা উমর খালিদ যিনি ২০১৬ সালে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় অভিযুক্ত হয়েছিলেন এবং বর্তমানে পৃথক একটি মামলায় কারাগারে রয়েছেন, তিনিও এই কথা জানিয়েছিলেন।