প্রায় চারমাস ধরে চিকিৎসার পর দেশে ফিরলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি-র সর্বোময় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে উঠে আসা তথ্য অনুসারে - আজ (মঙ্গলবার - ৬ মে, ২০২৫) স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৩০ মিনিট নাগাদ ঢাকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে খালেদাকে নিয়ে আসা বিশেষ বিমান বা এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স।
উল্লেখ্য, গুরুতর অসুস্থ থাকায় গত ৮ জানুয়ারি (২০২৫) বাংলাদেশ থেকে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করেন খালেদা। তাঁর স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে তাঁর জন্য বিশেষ বিমান বা এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। জানা গিয়েছে, সেই একই বিমানে এদিন বাংলাদেশে ফেরেন খালেদা।
তাঁর সঙ্গেই বাংলাদেশে ফিরেছেন তাঁর দুই পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান এবং সৈয়দা শামিলা রহমান। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের সময় অনুসারে - সোমবার রাতে খালেদাকে লন্ডনের বাড়ি থেকে হিথরো বিমানবন্দর পর্যন্ত পৌঁছে দেন তাঁর বড় ছেলে তথা বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তবে, তিনি মায়ের সঙ্গে দেশে ফেরেননি।
এদিকে, খালেদা জিয়াকে বিমানবন্দরে নিতে যান বিএনপি-র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর-সহ দলের অন্য নেতারা। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম অনুসারে - খালেদার দেশে ফেরা নিয়ে বিএনপি নেতা ও কর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিন বিমানবন্দর থেকে গুলশন এলাকায় অবস্থিত তাঁর অভিজাত বাসভবন 'ফিরোজা'য় ফিরে যান খালেদা।

এই পথে বিভিন্ন জায়গায় - রাস্তায় মোড়ে মোড়ে এবং রাস্তার দু'পাশে - এমনকী মাঝ-রাস্তাতেও নেত্রীকে স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন বিএনপি নেতা ও কর্মীরা। তাঁদের অনেকের হাতেই নেত্রীর ছবি-সহ নানা প্ল্যাকার্ড, ব্যানার প্রভৃতি ছিল। তাঁরা খালেদার সমর্থনে স্লোগানও দিতে থাকেন।
এদিকে, খালেদা ফিরতে না ফিরতেই বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে মূলত দু'টি প্রশ্ন উঠছে। প্রথমত, খালেদা ফেরার পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপি-র সমীকরণ কেমন হবে? এবং নবনির্মিত ও নানাভাবে চর্চায় থাকা রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র সঙ্গেই বা বিএনপি-র কেমন সম্পর্ক থাকবে?
কারণ, ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে নির্বাচন করানোর দাবি জোরালো হচ্ছে। আর সেই দাবি তোলার ক্ষেত্রে আগাগোড়া এগিয়ে থেকেছে বিএনপি নেতৃত্ব। কিন্তু, মহম্মদ ইউনুসের প্রশাসন আপাতত সংস্কারে মন দিয়েছে। ভোটের কথা উঠলেই বলা হচ্ছে, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে ভোট হতে পারে। প্রায় একই সুরে বাজছে এনসিপি-ও।
এই প্রেক্ষাপটে মির্জা ফখরুল সরাসরি অভিযোগ করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কেউ কেউ নাকি চানই না বাংলাদেশে ভোট হোক! অন্যদিকে, নির্বাচন-সহ নানা ইস্যুতে এনসিপি এবং বিএনপি-র মধ্যে সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী অবস্থান দেখা গিয়েছে। খালেদা ফেরার পর গোটা পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, এখন সেটাই দেখার।