Durga Puja 2024: জঙ্গলমহলের বেলপাহাড়ি অরণ্যে রয়েছে এক পাথরের পাহাড়। তারই নাম লালজল। লালজল নামের রক্তের যেন প্রতীকী মিল। আর বারবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে এই লালজলেই। মাওবাদী আতঙ্কের জন্য কুখ্যাত এলাকা ঝাড়গ্রামের এই জঙ্গলমহল (Jangalmahal Laljol Pahar)। দীর্ঘদিন এখানে অশান্তি জিইয়ে ছিল। এই লালজলেই প্রথম পাওয়া গিয়েছিল এক পুলিশের মৃতদেহ। কিন্তু সেই মৃতদেহের পিছনে মাওবাদী তত্ত্ব ছাড়াও অন্য এক ঘটনা রয়েছে বলে মনে করেন এলাকার বাসিন্দারা। রোমহর্ষক সেই কাহিনী।
আরও পড়ুন - Durga Puja 2024: পানিহাটিতে ১০০ ফুট উঁচু নজরকাড়া মণ্ডপ, প্রশাসনের সায় নিয়ে দানা বাঁধছে বিতর্ক
লালজলের গুহার কাহিনি
লালজলের ভিতর একটি গুহা রয়েছে। এই গুহা আদিম মানব গুহা নামেই পরিচিত। এর মধ্যে থেকে প্রাচীনকালে মানুষের ব্যবহার্য বিভিন্ন জিনিসও এককালে পাওয়া গিয়েছিল। এমনকি দুর্গার প্রাচীন মূর্তিও এখানে ছিল বলে স্থানীয়দের বিশ্বাস। সেই মাফিক প্রশাসনের তরফে খননকার্য শুরু হয়। কিন্তু সেই কাজে বাধা দিয়েছিল একটি বিষধর সাপ। তার পর থেকে খোঁড়াখুঁড়ি স্থগিত হয়ে যায়। লালজলের ওই গুহার কাছেই এক সাধু ধ্যান করতেন। তিনিই বলেন এই খননকার্য বন্ধ রেখে মায়ের পুজো করতে (Durga Puja)। মায়ের পুজো প্রতি বছর নিয়ম করে করার নির্দেশও দেন। কিন্তু একবছর পুজো হয়নি সেখানে। ঘটনাচক্রে সেই বছরই পাওয়া গিয়েছিল পুলিশের মৃতদেহ। সেবার নিজেদের ভুল উপলব্ধি করতে পেরেছেন গ্রামবাসীরা। তার পর থেকে নিয়মিত পুজো হয় জঙ্গলমহলের ওই লালজল পাহাড়ে।
পুজো ঘিরে চলে মেলা
এর পর পাহাড়ের কোলে সাধু বাবার জন্য একটি আশ্রমও গড়ে তোলা হয়। সেখানে নিত্য পুজোর ব্যবস্থাও রয়েছে। পুজোর তিনদিন ধুমধাম করেই দেবীবন্দনা চলে। বিশেষ করে নবমীর দিন বাসন্তী পুজোরও আয়োজন হয়। ওই দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে ভক্তদের আনাগোনা। পাশ্ববর্তী রাজ্য থেকেও ভক্তরা আসে। এই পুজোকে কেন্দ্র করে মেলাও বসে ওই এলাকায়। গ্রামের সমস্ত পুরুষ মহলা মাথায় ঘট (Durga Puja 2024) নিয়ে ঢাকঢোল বাদ্য সহযোগে গ্রাম প্রদক্ষিণ করে।
এছাড়াও পুজোর সময় বেলপাহাড়ির হোমস্টেগুলিতে প্রচুর পর্যটক আসেন। প্রায় সবকটি হোমস্টেই বুকিং হয়ে যায় বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় হোমস্টে মালিকরা। বেলপাহাড়ির এক পর্যটন ব্যবসায়ী বিদ্যাসাগর গোড়াই বলেন, ‘সারা বছরই পর্যটকদের আনাগোনা আছে এখানে, বিশেষ করে পুজোর সময় ফাঁকা থাকে না সমস্ত বুকিং হয়ে যায়।’