ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, যাঁর নেতৃত্বে মেন ইন ব্লু দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০০৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছেছিল, তিনি ২০২৩ ফাইনালে ভারতের হয়ে গলা ফাটাতে পৌঁছে গিয়েছেন আমদাবাদে। শনিবারই তিনি পৌঁছে যান। ২০০৩ সালে সৌরভের নেতৃত্বে ভারত ফাইনালে উঠলেও, শেষ রক্ষা করতে পারেনি। অস্ট্রেলিয়ার কাছে ফাইনালে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল টিম ইন্ডিয়ার। এবার রোহিতের নেতৃত্বে ভারতের বদলা নেওয়ার পালা। আর নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে বসে সেই বদলার ম্যাচ উপভোগ করতে চান মহারাজ। রোহিতরা অজিদের হারালে, তাঁর যন্ত্রণাতেও তো কিছুটা প্রলেপ পড়বে।
শুধু সৌরভ নন, ভারতের আর এক প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিরও উপস্থিত থাকার কথা ফাইনাল ম্যাচে। ধোনির নেতৃত্বে ভারত আবার ২০১১ ওডিআই বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তার আগে ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেরও শিরোপা জিতেছিল। এছাড়া ধোনির নেতৃত্বে ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল ভারত।
কলকাতার মহারাজকে শনিবার আমদাবাদের বিমানবন্দরে দেখা গিয়েছে। প্রাক্তন অধিনায়ককে ভারতীয় ক্রিকেটের মান বাড়ানোর জন্য আলাদা করে স্মরণ করা হয়ে থাকে। বিশেষত বিদেশে দলের পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে সৌরভ অন্য মাত্র এনে দিয়েছিলেন দলে। তাঁর সময়েই আগ্রাসী পারফরম্যান্স করতে দেখা গিয়েছে টিম ইন্ডিয়াকে। সেই সময় থেকেই ভারতীয় দলের সঙ্গে আগ্রসনের পরিচয় ঘটে। বিপক্ষকে তোয়াক্কা না করে, সকলের চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে শেখান সৌরভই।
শুক্রবার সৌরভ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ভারতকে এই মুহুর্তে বিধ্বংসী লাগছে। আমি আমদাবাদের জন্য ওদের শুভকামনা জানাই। টুর্নামেন্টে ভারত খুব ভালো খেলেছে। আর মাত্র একটি ম্যাচ। অস্ট্রেলিয়া এখন ভারত এবং বিশ্বকাপ ট্রফির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। ভারত যদি তাদের মতো খেলতে থাকে, তা হলে টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত যা পারফর্ম করেছে, তাতে ওদের থামানো কঠিন হবে। অস্ট্রেলিয়াও একটি ভালো দল। স্বভাবতই এটি একটি ভালো ম্যাচ হতে চলেছে।’
বুধবার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে ৭০ রানে দুরন্ত জয় ছিনিয়ে নিয়েছে টিম রোহিত। রোহিত শর্মা এবং শুভমান গিলের বিস্ফোরক ওপেনিং খেলায় অন্য মাত্রা যোগ করছে। সেখানেই পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে ভারত। কিউয়িদের বিরুদ্ধেও একই ঘটনা ঘটেছে। এর পর বিরাট কোহলি এবং শ্রেয়স আইয়ার সেঞ্চুরি করে ভারতকে রানের পাহাড়ে পৌঁছে দিয়েছিলেন। ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৯৭ রান করেছিল ভারত। এর পর মহম্মদ শামির আগুনে বোলিং, ৭ উইকেট তুলে নিয়ে ভারতের জয়ে নিশ্চিত করেন তিনি।
এদিকে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে, কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং বিপর্যয় ঘটে। টপ অর্ডার ব্যাটাররা ল্যাজেগোবরে হয়। মার্করামের সেঞ্চুরির হাত ধরে কোনও মতে ২১৩ রানের লক্ষ্য রাখে দক্ষিণ আফ্রিকা। পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নরা রান তাড়া করতে নেমে কিছুটা বিপাকে পড়লেও, কম লক্ষ্য থাকায় সাত উইকেটে সেই রান তুলে ফেলে। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স এবং স্পিডস্টার মিচেল স্টার্ক তাদের স্নায়ু ধরে রেখে তিন উইকেটে জয় এনে দেন।