২০১৯ ও ২০২০ সালে রাজস্থান রয়্যালস শিবিরে থাকলেও মাঠে নামার সুযোগ পাননি। ২০২১ সালে আইপিএলের আঙিনায় ছিলেন না। ২০২২ সালে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে নজর কাড়তে পারেননি। ২০২৩ সালে আইপিএল খেলার সুযোগ হয়নি শশাঙ্ক সিংয়ের।
২০২৪-এর মিনি নিলাম থেকে শশাঙ্ক সিংকে ভুল করে দলে নেয় পঞ্জাব কিংস। ২০ লক্ষ টাকার বেস প্রাইসে শশাঙ্ককে দলে নিয়ে নিলামের আসরেই ফিরিয়ে দিতে চায় পঞ্জাব কিংস। তবে বিক্রিত ক্রিকেটার ফেরৎ নেওয়া হয় না, নিলামের এই নিয়মেই পঞ্জাব শিবির তেতো ওষুধ গিলতে বাধ্য হয়।
নিতান্ত তাচ্ছিল্যের সঙ্গে শশাঙ্ককে দলে নিলেও পঞ্জাবের ভুল ভাঙতে সময় লাগেনি। ভুল করে দলে নেওয়া শশাঙ্ক নিজের পারফর্ম্যান্স দিয়ে তাচ্ছিল্যের জবাব দেন। শশাঙ্কের তেতো ওষুধই যে পঞ্জাবের ব্যাটিং রোগ সারানোর মহৌষধি, সেটা বুঝে যান প্রীতি জিন্টারা। ২০২৪ আইপিএলে এমন পারফর্ম্যান্স মেলে ধরেন শশাঙ্ক, তাঁকে ২০২৫ আইপিএলের জন্য স্কোয়াডে রিটেন করতে বাধ্য হয় পঞ্জাব কিংস।
আইপিএল ২০২৪-এ শশাঙ্কের পারফর্ম্যান্স
২০২৪ আইপিএলের ১৪টি ম্যাচে মাঠে নেমে ৪৪.২৫ গড়ে ৩৫৪ রান সংগ্রহ করেন শশাঙ্ক সিং। স্ট্রাইক-রেট ১৬৪.৬৫। সুপারস্টার ক্রিকেটারদের টপকে পঞ্জাবের হয়ে সব থেকে বেশি রান সংগ্রহ করেন তিনি। দলের হয়ে সব থেকে বেশি ২১টি ছক্কাও হাঁকান শশাঙ্ক। এমন পারফর্ম্যান্সের পরে শশাঙ্ককে ৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার বিশাল অঙ্কে আইপিএল ২০২৫-এর স্কোয়াডে ধরে রাখে পঞ্জাব কিংস।
আরও পড়ুন:- রোহিত-কোহলি নেই, টেস্ট দলে জায়গা পাকা করতে ১০ কেজি ওজন কমালেন সরফরাজ- রিপোর্ট
২০২৪-এর নিলামে পঞ্জাবের মনে হয়েছিল যে তারা ভুল লোকের পিছনে ২০ লক্ষ টাকা খরচ করেছে। যদিও পরবর্তী সময়ে তাদের সেই ভুল ভাঙে। এবার ২০২৫ আইপিএলের আগে পঞ্জাব যে ভুল লোকের পিছনে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেনি, সেটাও বোঝা যায় স্পষ্ট।
আইপিএল ২০২৫-এ শশাঙ্কের পারফর্ম্যান্স
চলতি আইপিএলে পঞ্জাবের হয়ে ১০টি ইনিংসে ব্যাট করে সব থেকে বেশি ৬৮.২৫ গড়ে ২৭৩ রান সংগ্রহ করেছেন শশাঙ্ক। স্ট্রাইক-রেট ১৫১.৬৬। রবিবার জয়পুরে রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে দরকারের সময় ঝোড়ো হাফ-সেঞ্চুরি করেন শশাঙ্ক। তিনি ৫টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৩০ বলে ৫৯ রান করে অপরাজিত থাকেন।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, একদা যে ক্রিকেটারের পিছনে মাত্র ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে ভুল হয়ে গিয়েছে বলে মনে হয়েছিল পঞ্জাবের, বছর ঘুরতে সেই ক্রিকেটারকেই দেখা যায় পঞ্জাবের ক্যাপ্টেনের ভূমিকায়। রবিবার আঙুলে চোট নিয়ে পঞ্জাবের নিয়মিত ক্যাপ্টেন শ্রেয়স আইয়ার ব্যাট করতে নামেন। তবে তিনি দ্বিতীয় ইনিংসে ফিল্ডিং করতে নামেননি। তাঁর পরিবর্তে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে মাঠে নামেন স্পিনার হরপ্রীত ব্রার।
পঞ্জাবকে নেতৃত্ব দিলেন শশাঙ্ক
শ্রেয়স মাঠে না নামায় পঞ্জাবের ক্যাপ্টেন্সির দায়ভার পড়ে শশাঙ্কের কাঁধে। তাঁর বেশ কিছু সিদ্ধান্ত প্রশংসা কুড়িয়ে নেয় বিশেষজ্ঞদের। সুতরাং, আইপিএলের মঞ্চে গলি থেকে রাজপথে উঠে আসার সব থেকে বড় উদাহরণ পেশ করেন শশাঙ্ক।