আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে এবার বাইক পার্কিং থেকেও তোলাবাজি চালানোর অভিযোগ করল সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, এই তোলাবাজির ভাগ সরাসরি সন্দীপ এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী তথা দেহরক্ষী আফসার আলির পকেটে ঢুকেছে!
বৃহস্পতিবার আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে আরজি কর আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। এই মামলায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত হলেন সন্দীপ ঘোষ। পাশাপাশি, এই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সন্দীপের সঙ্গে 'যোগ্য সঙ্গত' দেওয়ার অভিযোগে সিবিআই সন্দীপের পাশাপাশি তাঁর 'শাগরেদ' আফসারকেও গ্রেফতার করেছিল।
আদালতে সিবিআই জানিয়েছে, এই মামলার তদন্তে একাধিক সাক্ষীর সঙ্গে কথা বলেছেন গোয়েন্দারা। তাতে জানা গিয়েছে, আরজি কর হাসপাতাল চত্বরে কেউ বাইক পার্ক করলেই তাঁর কাছ থেকে তোলা আদায় করা হত। সেই টাকায় সরাসরি লাভবান হয়েছেন সন্দীপ ও আফসার। এমনকী, আফসারকে বেআইনিভাবে একাধিক কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে সন্দীপের বিরুদ্ধে। সেইসঙ্গে, প্রশ্ন উঠেছে আফসারের নিয়োগ নিয়েই! যদিও আফসারের আইনজীবী এই সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন।
এদিন এই মামলার শুনানি শুরু হলে আফসারের আইনজীবী তাঁর মক্কেলের জামিনের আবেদন করেন। এবং নিজের আবেদেনের স্বপক্ষে বেশ কিছু জোরালো তত্ত্ব তুলে ধরেন।
তাঁর যুক্তি ছিল, যদি সত্যিই আফসার বাইক পার্কিং থেকে তোলাবাজি করে থাকেন, তাহলে সেই টাকা কোথায় গেল? সেই টাকা সিবিআই উদ্ধার করতে পারল না কেন?
পাশাপাশি, আফসারের আইনজীবী আরও প্রশ্ন তোলেন, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে জালিয়াতির ধারায় মামলা রুজু করার পরও সিবিআই কেন সেই সংক্রান্ত জোরালো নতি পেশ করতে পারছে না?
যদিও সিবিআইয়ের বক্তব্য, বাইক পার্কিং থেকে তোলাবাজি করার অসংখ্য সাক্ষী রয়েছেন। আর আর্থিক দুর্নীতিতে আফসারের কী ভূমিকা ছিল, কীভাবে তিনি উপকৃত হয়েছিলেন, তার বিস্তারিত ব্যাখ্য়া চার্জশিটেই দেওয়া রয়েছে।
সিবিআইয়ের আরও অভিযোগ, সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এবং স্বাস্থ্য ভবনকে পাশ কাটিয়ে আফসারের বেনামী সংস্থাকে একাধিক কাজের বরাত পাইয়ে দিয়েছেন সন্দীপ ঘোষ।
যদিও আফসারের আইনজীবীর বক্তব্য, সিবিআই মুখে এসব অভিযোগ করলেও এর স্বপক্ষে তেমন কোনও প্রমাণ দাখিল করতে পারেনি।
তিনি আরও জানান, তাঁর মক্কেলকে সহকারী নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে আরজি করে নিয়োগ করা হয়েছিল। তাই তিনি সন্দীপ ঘোষকে চিনতেন। এর থেকে বেশি তাঁদের মধ্যে কোনও সম্পর্ক ছিল না। কারণ, তাঁর মক্কেল সন্দীপ ঘোষের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী ছিলেন না।
পালটা সিবিআই আদালতকে জানিয়েছে, এই বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তারা জানিয়েছে, আফসার অস্থায়ী চুক্তিভিত্তিক কর্মী। তাই তাঁকে সরকারি কর্মী বলা যায় না।