পানাগড় কাণ্ডের পর গা–ঢাকা দিয়েছিল মূল অভিযুক্ত বাবলু যাদব। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ওই ঘটনার চারদিনের মাথায় গ্রেফতার করল কাঁকসা থানার পুলিশ। এই ঘটনার পর যখন বাবলু নাম উঠে আসে তখন পরিবারের সদস্যদের ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সেখান থেকে যে তথ্য মেলে তার ভিত্তিতেই বাবলুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কাঁকসা থানার পুলিশ এখনও পলাতক তিনজন বাবলুর সঙ্গীকে খুঁজছে। তাই চলছে তল্লাশি। আর এই ঘটনায় অভিযুক্তের কঠোরতম শাস্তির দাবিতে করেছেন মৃতার মা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায়। যে সাদা এসইউভি গাড়ি নিহত সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের গাড়িকে ধাওয়া করছিল সেদিন সেটা চালাচ্ছিল বাবলু যাদবই। ওই এসইউভি গাড়ির মালিকও বাবলুই বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তবে তাকে গ্রেফতার করা হলেও পুলিশের ভূমিকায় খুশি নন মৃতার মা।
পুলিশ ইতিমধ্যেই একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এনেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, সুতন্দ্রার গাড়িই ধাওয়া করেছিল ওই সাদা এসইউভি’কে। যদিও তা মানতে নারাজ মৃতার মা তনুশ্রী দেবী। দুর্গাপুরের একটি পেট্রোল পাম্প থেকে তেল ভরার পর সুতন্দ্রাদের গাড়িকে ধাওয়া করে একটি সাদা এসইউভি গাড়ি বলে অভিযোগ। যে গাড়িতে কয়েকজন মদ্যপ যুবক ছিল বলে অভিযোগ। অভিযোগ, তারা সুতন্দ্রাকে ইভটিজিং করে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় যুবতীর। পেট্রোল পাম্পের মালিক দাবি করেছেন, সেখানে ওই রাতে সাদা এসইউভি গাড়ি আসেইনি।
আরও পড়ুন: ‘আমাদের মেয়ে প্রার্থীদের সংখ্যা ৩৯ শতাংশ, বাঘের মতো লড়াই করে’, প্রশংসা মমতার
পুলিশ এই ঘটনার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছে। রেষারেষির জেরেই এই পথ দুর্ঘটনা এবং মৃত্যু বলে দাবি করে আসছে পুলিশ। আর বাবলু গ্রেফতার হতেই সুতন্দ্রার মা প্রশ্ন তোলেন, ‘সাদা গাড়িতে তো আরও অনেকে ছিলেন। তাদের কেন এখনও গ্রেফতার করা গেল না?’ এটা সত্যই বড় প্রশ্ন। কারণ ওই গাড়িতে আরও চারজনের থাকার তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তাহলে ঘটনার পর থেকে তিনদিন কেটে গেলেও কেন তাদের ধরা গেল না? উঠছে প্রশ্ন।
কে এই বাবলু যাদব? গাড়ির পুরনো যন্ত্রপাতি কেনাবেচার ব্যবসায়ী বাবলু যাদব। স্থানীয় কাওয়ারি বাজারে বাবলুর ব্য়বসা রয়েছে। এলাকায় বেশ প্রভাবশালী বলেই পরিচিত। কদিন আগে তার আর এক কর্মী পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ওই কর্মীকে রবিবার রাতে দেখতে যায় বাবলু যাদব। সঙ্গে সহকর্মীরাও ছিল। সেখান ফেরার পথেই সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের গাড়ির সঙ্গে রেষারেষি শুরু হয় বাবলুর গাড়ির বলে পুলিশের দাবি। যদিও সুতন্দ্রার গাড়িতে থাকা সহকর্মীরা এবং চালকের দাবি, ইভটিজিং করা হয়েছিল। গাড়ি ধাওয়াও করা হয়েছিল। এমনকী গাড়ির পিছনে ধাক্কা মারার ফলেই তা দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে রাইস মিলে ঢুকে যায়। আর বাবলু পানাগড়েরই বাসিন্দা। সুতন্দ্রার মা শুধু রেষারেষির জন্য এই ঘটনা মানতে নারাজ।