পর পর কয়েকটি ঘটনা। এক, হাওড়া স্টেশনে বিপুল পরিমাণ সম্পদ উদ্ধার যাত্রীর ব্যাগ থেকে। দুই, শালিমার স্টেশনের বাইরে শিশু পাচার করতে গিয়ে গ্রেফতার দুই এবং তিন, আন্তঃরাজ্য মাদক পাচার করতে গিয়ে তিনজন মহিলা–সহ ১১ জন গ্রেফতার। এই তৃতীয় ঘটনাটি আজ, রবিবার ঘটেছে। সবক্ষেত্রেই একটা মিল আছে। সেটা হল সরকারি যানবাহন ব্যবহার করা হয়েছে। এই মাদক পাচারের কাজে সরকারি বাসকে ব্যবহার করেছে পাচারকারীরা। কারণ পুলিশ ধরপাকড় এড়াতে হলে এটার থেকে আর ভাল কোনও উপায় নেই। সরকারি বাসে তেমন তল্লাশি হয় না। তাই এই কাজ তাতেই করা সম্ভব। যদিও শেষরক্ষা হল না।
পুলিশ সূত্রে খবর, দিঘা থেকে কলকাতায় রাতে সরকারি বাস চড়ে গাঁজা পাচারের সময় গ্রেফতার করা হয়েছে তিনজন মহিলা–সহ ১১ মাদক পাচারকারীকে। এই ঘটনা নিয়ে বাস কন্ডাক্টর এবং ড্রাইভারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁরা কিছু জানেন কিনা সেই জন্যই এই জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ওই মাদক পাচারকারীদের কাছে থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ২০০ কেজি গাঁজা। যার বাজারমূল্য অনেক। সরকারি বাস থেকে এবার প্রায় ২০০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে কাঁথি থানার পুলিশ। পুলিশের হাতে পড়া ঠেকাতে সরকারি বাসকে টার্গেট করেছিল আন্তঃরাজ্য মাদক পাচারকারীরা। এভাবেই ওড়িশা থেকে কলকাতা এবং ভিন রাজ্যে বিপুল পরিমাণ গাঁজা পাচার করা হতো।
আরও পড়ুন: এবার থেকে করতে হবে ‘অ্যাকাউন্ট ভ্যালিডেশন’, ট্যাব কাণ্ডের পর বড় সিদ্ধান্ত নবান্নর
এই মাদক পাচারের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কারণ আগে সরকারি বাস ব্যবহার করে মাদক পাচার হয়েছে কিনা বোঝা যাচ্ছে না। এবার থেকে সরকারি বাসে তল্লাশি চালাতে হবে বলে জেলা পুলিশ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দিঘা থেকে এই সরকারি বাসটি দুর্গাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। ওই বাসে ১১ জন ব্যক্তি একাধিক ব্যাগে ২০০ কেজি গাঁজা নিয়ে উঠেছিল। গোপন সূত্রে এই খবর পেয়ে যায় কাঁথির এসডিপিও দিবাকর দাস এবং কাঁথি থানার আইসি প্রদীপ কুমার দাঁ। তার পর সরকারি বাসে উঠে কাঁথি থানার পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে গাঁজা ভর্তি ব্যাগ বাজেয়াপ্ত করে। আর ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
পাচারকারীদের দফায় দফায় জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওড়িশা থেকে গাঁজা নিয়ে এসে তা বর্ধমান হয়ে কলকাতায় পৌঁছে দেওয়া হতো। সম্প্রতি বেসরকারি বাস এবং লরির নানা সামগ্রীর মধ্যে গাঁজা ঢুকিয়ে পাচারের সময় ধরা পড়ে যায় গাঁজা পাচারকারীরা। তাই এবার বিকল্প পথ বের করা হয়েছে। সরকারি বাসকে ব্যবহার করে মাদক পাচারের কাজ করছিল পাচারকারীরা। পাচারকারীদের কয়েকটি টিম যুক্ত আছে। যারা এই কাজ করে চলেছে। এখন তাদের পাকড়াও করার চেষ্টা চলছে। এই কাজে মহিলারাও যুক্ত থাকায় চোখ কপালে উঠেছে। ধৃতদের মধ্যে তিনজন মহিলা রয়েছে। গাঁজা ছাড়াও অন্য মাদকও পাচার করে তারা।