অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা এক মহিলা। কথা ছিল, পার্সেলের মাধ্যমে বেশ কিছু বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পাবেন তিনি। সেই মতো পেল্লায় এক পার্সেল তাঁর বাড়িতে পৌঁছেও যায়। কিন্তু, সেই পার্সেল খুলতেই ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে মানব দেহের ধরের নানা অংশ! যা দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হয় ওই মহিলার।
এখানেই শেষ নয়, সূত্রের দাবি, ওই পার্সেলের সঙ্গেই ছিল একটি হুমকি চিঠি। যে চিঠিতে প্রাপকের তরফে চাওয়া হয় - ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা! এসব দেখে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন ওই মহিলা।
অন্ধ্রপ্রদেশের পশ্চিম গোদাবরী জেলার এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। একদিকে যেমন সোশাল মিডিয়ায় এই ঘটনা নিয়ে জোর চর্চা চলছে, তেমনই এমন আজব কাণ্ডে পুলিশও তাজ্জব বনে গিয়েছে।
যে মহিলার সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে, তাঁর নাম সাগি তুলসী। তিনি গোদাবরী জেলার উন্ডি মণ্ডলের ইয়েন্ডাগান্ডি গ্রামের বাসিন্দা। মহিলার দাবি, তাঁর বাড়িতে নির্মাণ সংক্রান্ত কাজ চলছে।
এই কারণেই তাঁর কাছে একটি পার্সেল আসার কথা ছিল। তাতে মূলত বৈদ্যুতিক বিভিন্ন সরঞ্জাম থাকার কথা ছিল। যেগুলি তাঁকে পাঠানোর কথা ছিল ক্ষত্রিয় সেবা সমিতি নামক একটি সংস্থা থেকে।
মহিলা আরও জানিয়েছেন, তাঁর কাছে বাড়ি তৈরির পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় আগেও ওই সংস্থার কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন তিনি। সেই সময় তারা তাঁকে বিনামূল্য়ে টালি দিয়ে সাহায্য করেছিল।
ফলত, এবার তিনি ভেবেছিলেন, হয়তো তাঁকে পাখা, টিউব লাইট - এই ধরনের বিভিন্ন সরঞ্জাম পাঠানো হবে। বদলে যে পার্সেল তাঁর দোরগোড়ায় ফেলে রেখে যাওয়া হয়, তার ভিতরে ছিল একটি পূর্ণবয়স্ক মানুষের ধর এবং ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা চেয়ে লেখা একটি হুমকি চিঠি! ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, যদি ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা তুলসী প্রেরককে না পাঠান, তাহলে তাঁকে এর জন্য চরম ফল ভোগ করতে হবে।
এই ঘটনার খবর পাওয়ার পরই পুলিশের কর্মী ও আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। প্রাথমিক তদন্তে তাঁরা জানতে পেরেছেন, যে ধরটি উদ্ধার করা হয়েছে, সেটি একজন পুরুষের। তাঁর বয়স ৪৫ বছরের আশপাশে হবে। এবং খুব সম্ভবত দিন পাঁচেক আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন পশ্চিম গোদাবরীর পুলিশ সুপার আদনান নইম আজমি। তদন্ত প্রক্রিয়া কীভাবে এগোচ্ছে, তা খতিয়ে দেখেন তিনি। দেহটি কার, তা জানতে বিভিন্ন থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে নিখোঁজদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
এবং যে ক্ষত্রিয় সেবা সমিতির তরফ থেকে তুলসীকে পার্সেল পাঠানোর কথা ছিল, তাদের প্রতিনিধিকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই সংস্থার প্রতিনিধিদের এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব নিহত ব্যক্তির পরিচয় জানার চেষ্টা করা হবে।