কর্তব্যে চরম গাফিলতির অভিযোগে কেবিন ক্রু-এর তিন সদস্যের নাম তাঁদের ডিউটি রোস্টার থেকে সরিয়ে দিল এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা এককথায় ভয়াবহ ও গুরুতর।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তরা বিমানের দরজা ঠিক মতো বন্ধ না করায় জরুরি অবস্থায় বিমান থেকে বের হওয়ার জন্য যে 'স্লাইডার' থাকে, সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে যায়!
ঘটনাটি ঘটে গত ১৫ সেপ্টেম্বর, সানফ্রান্সিস্কো-বেঙ্গালুরু রুটের একটি বিমানে।
যদিও পিটিআই-এর রিপোর্টে এও দাবি করা হয়েছে, এই ঘটনায় যান্ত্রিক গোলযোগেরও নাকি সন্ধান মিলেছে!
তথ্য মোতাবেক, এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এয়ার ইন্ডিয়ার একজন মুখপাত্র জানান, ওই বিমানে কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি পাওয়া গিয়েছে। যার ফলে অবতরণের পর দু'টির মধ্যে একটি দরজা ঠিক মতো খুলছিল না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়েছে বলেও এয়ার ইন্ডিয়ার ওই মুখপাত্র জানিয়েছেন।
ঠিক কী ঘটেছিল?
এই ঘটনা সম্পর্কে এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের মুখপাত্র জানিয়েছেন, গত ১৫ সেপ্টেম্বর ফ্লাইট ১৭৬-এর বিমানকর্মীরা একটি সমস্য়ার সম্মুখীন হন। ওই বিমানটির দু'টির মধ্যে একটি দরজা ঠিকঠাক কাজ করছিল না। সংশ্লিষ্ট বিমানটি সানফ্রান্সিস্কো থেকে যাত্রা শুরু করে এবং বেঙ্গালুরুতে এসে অবতরণ করে।
এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে বলা হয়, 'বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখে তৎক্ষণাৎ সমস্যার সমাধান করা হয়। যাত্রীদের নিরাপদে নামিয়ে আনা হয়। এবং পরবর্তীতে বিমানটিকে ফের উড়ান শুরু করার অনুমতিও দেওয়া হয়।'
বিমান সংস্থার তরফে আরও জানানো হয়েছে, এই ঘটনার ফলে সংশ্লিষ্ট এয়ারোব্রিজের কোনও ক্ষতি হয়নি। নজরদারির দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ পুরোটা খতিয়ে দেখেই এই তথ্য দিয়েছে।
যদিও পিটিআই-এরই একই সূত্র বলছে, 'নিরাপত্তার এই গাফিলতি অত্যন্ত গুরুতর। গত ১৫ সেপ্টেম্বর এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বোয়িং ৭৭৭ বিমানটি, অর্থাৎ এআই ১৭৬ উড়ানটি সানফ্রান্সিস্কো থেকে বেঙ্গালুরু পৌঁছয়। ওই বিমানের দরজা আর্মড মোডে ছিল। অর্থাৎ সেটি খোলা ছিল। যার ফলে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে অবতরণের পরই বিমানের এমার্জেন্সি স্লাইডার নিজে থেকেই খুলে যায়।'
পিটিআই-এর অপর একটি সূত্র বলছে, এই ঘটনার পর তিন বিমানকর্মীর নাম তাঁদের রোস্টার থেকে অপসারিত করা হয়েছে। সত্যাসত্য জানতে অভ্যন্তরীণ তদন্তও শুরু করা হয়েছে। তবে, তিন কর্মীর বিরুদ্ধে করা এই পদক্ষেপ নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ মুখে কুলুপ এঁটেছে।
সূত্রের আরও দাবি, ঘটনার সময় বিমানবন্দরে কর্তব্যরত ইঞ্জিনিয়রদের ডেকে পাঠানো হয়। তাঁরাই এসে ওই এমার্জেন্সি স্লাইডার সরিয়ে দেন।
আরও একটি সূত্র জানাচ্ছে, এর ফলে ওই এমার্জেন্সি স্লাইডারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ফলত, সেটিকে সরিয়ে, তার বদলে নতুন এমার্জেন্সি স্লাইডার লাগানো হয়। এতে বেশ কিছুটা সময় লেগে যায়। যার জেরে পরবর্তী বেঙ্গালুরু-সানফ্রান্সিস্কো উড়ান শুরু করতে দেরি হয়।