সম্প্রতি কাতার এয়ারওয়েজর বিমানে মৃতদেহের পাশে বসে বিভীষিকাময় যাত্রার কথা জানিয়েছিলেন এক অস্ট্রেলিয়ান দম্পতি। অস্ট্রেলিয়ার চ্যানেল ৯-কে মিচেল রিং এবং জেনিফার কলিন জানান, মেলবোর্ন থেকে দোহা যাওয়ার সময় তাদের পাশের আসনে একজন মহিলার মৃত্যু হয়। কেবিন ক্রু অর্থাৎ বিমানকর্মীদের অনুরোধ করা হয়, দেহটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার। কিন্তু তা করা হয়নি। বিমান যাত্রার বাকি চার ঘন্টা কম্বল দিয়ে ঢেকে ওখানেই রাখা হয় মৃতদেহ। আর এই ঘটনায় ওই দম্পতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার পরিবর্তে পাল্টা কেবিন ক্রুদের কাজকেই সমর্থন করেছে কাতার এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ। (আরও পড়ুন: জেলেনস্কিকে ‘অহংকারী বরাহনন্দন’ তোপ, হোয়াইট হাউজের 'ঝামেলায়' মজা পেয়েছে রাশিয়া)
বিবিসিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে কাতার এয়ারওয়েজ বলেছে, তাদের কেবিন ক্রুরা দ্রুত, যথাযথ এবং পেশাদারিত্বের কাজ করেছে। অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে মহিলার মৃত্যুর ঘটনার পর কেবিন ক্রুরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সঙ্গতিপূর্ণ ছিল। তাঁরা মৃতের পরিবার এবং এই ঘটনায় প্রভাবিত যাত্রীদের সহায়তা এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছেন।মহিলার মৃত্যুর পর অন্যান্য যাত্রীদের অন্য আসনে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল এবং দোহায় বিমান অবতরণের আগে পর্যন্ত একজন ক্রু সদস্য সর্বদা মৃত যাত্রীর সঙ্গে বসে ছিলেন। বিমান সংস্থা আরও বলেছে, 'এটি দুর্ভাগ্যজনক যে কখনও কখনও বিমানে অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর ঘটনার ঘটে। তবে আমাদের ক্রুরা যথাসম্ভব সম্মান এবং মর্যাদার সঙ্গে এই সমস্ত পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য অত্যন্ত প্রশিক্ষিত। (আরও পড়ুন: USA-কে ধন্যবাদের বন্যায় ভাসালেন জেলেনস্কি, ঝামেলায় কি 'হার' হল ট্রাম্পের?)
আরও পড়ুন: অনুপ্রবেশের চেষ্টা ২০ পাচারকারীর, সংঘর্ষ সীমান্তে, জখম BSF, গুলিবিদ্ধ বাংলাদেশি
এর আগে অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যম চ্যানেল নাইন-এর কারেন্ট অ্যাফেয়ার প্রোগ্রামে মিচেল রিং বলেন, যে মহিলাটি বিমানের মধ্যে যখন পড়ে যান, তখন কর্মীরা কিছুক্ষণের মধ্যেই ছুটে এসেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত মহিলাটিকে বাঁচানো যায়নি। তিনি বলেন, কেবিন ক্রুরা মহিলাটির দেহ বিজনেস ক্লাসের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ভদ্রমহিলা বেশ লম্বা। তাই তাকে করিডর দিয়ে যেতে পারেননি। এই সময় ক্রুরা দেখেন, মিস্টার রিংয়ের পাশে আসন খালি আছে। তখন তাঁকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করে সেখানেই মৃতদেহটি রেখে দেওয়া হয়। উপর দিয়ে একটি কম্বল চাপা দিয়ে দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, রিং যেখানে বসেছিলেন, সেখানেই মহিলাটিকে বসিয়ে দেওয়া হয়। রিংকে সরে যেতে হয় পাশের আসনে। এই ঘটনাতেই প্রচণ্ড অবাক হয়ে যান তিনি। (আরও পড়ুন: নাহিদদের দলের আত্মপ্রকাশের মঞ্চের স্ক্রিনে হঠাৎ ফুটে উঠল হাসিনার ছবি, তারপর…)
আরও পড়ুন: অ্যাশলের পাশাপাশি শিভন! আরও একবার বাবা হলেন ইলন? কটা সন্তান মাস্কের?
ওই দম্পতির কথা প্রকাশ্যে আসতেই কাতার এয়ারওয়েজ অবশ্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিল। তারা জানিয়েছিল ‘এই ঘটনার কারণে সৃষ্ট যে কোনো অসুবিধা বা কষ্টের জন্য তারা ক্ষমাপ্রার্থী’। একই সঙ্গে এই ব্যাপারে যাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগের প্রক্রিয়াও চালিয়ে যাচ্ছে তারা। তবে দম্পতির কথায়, কাতার এয়ারওয়েজ বা কোয়ান্টাসের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ করা হয়নি। কোনও সহায়তাও করা হয়নি। প্রসঙ্গত, কোয়ান্টাস হল সেই বিমান সংস্থা যার মাধ্যমে তারা ফ্লাইট বুক করেছিলেন। বৃদ্ধ দম্পতির কথায়, এই ধরনের পরিস্থিতিতে বিমানের যাত্রীদের যত্ন নেওয়ার জন্য একটি প্রোটোকল (নিয়ম) থাকা উচিত।