পঞ্জাবের হোশিয়ারপুরের চৌরাগ্রামের রাম স্বরূপকে সদ্য গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৩১ বছরের রাম স্বরূপের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে ১১ জন পুরুষকে হত্যার। ১৮ মাসে ১১ জন পুরুষকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে রাম স্বরূপের বিরুদ্ধে। পুলিশে জেরায় ৩১ বছর বয়সী রামস্বরূপ ওরফে সোধি স্বীকারও করে নিয়েছে ১১ জনকে খুনের ঘটনা।
পঞ্জাবের 'সিরিয়াল কিলার' হিসাবে সোধির ভয়াবহ পর পর অত্যাচারের ঘটনা হাড়হিম করেছে অনেকেরই। জানা যাচ্ছে, যাঁদেরই রাম স্বরূপ খুন করেছে, তাঁদের আগে গাড়িতে লিফ্ট দিয়েছে সে। কখনও আবার প্যাটার্ন বদলে তাদের সঙ্গে যৌনতার কাণ্ডও ঘটিয়েছে বলে খবর। কিছু কেসে, নিজের অত্যাচারের শিকারদের গলায় ফাঁস বেঁধে সে খুন করেছে। কোনও কোনও কেসে, সে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে দিয়েছে ব্যক্তির।
লেখা ছিল ‘ধোকেবাজ’!
পুলিশি তদন্তে এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে, তাতে মনে করা হচ্ছে, যাঁরাই রাম স্বরূপকে টাকা দিতে অস্বীকার করেছেন, তাঁদেরই সে খুন করেছে। ফলে আপাতত অপরাধের উদ্দেশ্য, টাকা সংক্রান্ত ঝামেলা বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। 'ইন্ডিয়া টিভি'র খবর বলছে, বহু পুরুষকে গাড়িতে ‘লিফ্ট’ দেওয়ার অফার দিতে থাকে রাম স্বরূপ। তারপর তাঁদের গাড়িতে সওয়ার করেই লুঠ করত রাম স্বরূপ। তবে সেই লুঠের রাস্তায় যদি কেউ বাধা দিত, তখনই সে হত্যা করত বলে, পুলিশি তদন্তে জানা যাচ্ছে।
একটি ঘটনায়, রাম স্বরূপ এক ব্যক্তিকে খুনের পর তাঁর পিঠে লিখে দিয়েছিল ‘ঠকবাজ’ (হিন্দিতে লেখা ছিল ‘ধোকেবাজ’) বলে অভিযোগ। জানা যায়, ওই নিহত ব্যক্তি, এককালে সেনায় কর্মরত ছিলেন। পরে তিনি যোগ দেন পঞ্জাবে নিরাপত্তাকর্মীর কাজে। সেই ব্যক্তিকে খুন করে তাঁর মৃতদেহের পিঠের দিকে রাম স্বরূপ ‘ধোকেবাজ’ লিখে দিয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে। পুলিশ কর্তা নবনীত সিং মহল বলছেন,' বেশির ভাগ কেসে নিজের শিকারদের এক টুকরো কাপড় দিয়ে গলায় ফাঁস বেঁধে খুন করত সে, অন্য কেসগুলিতে ঘটনার শিকারদের মাথায় ইটের মতো ভারী জিনিস দিয়ে ঠুকে ঠুকে সে মাথা থেঁতলে দিয়ে খুন করত।' জানা যাচ্ছে, অভিযুক্ত বিবাহিত। পুলিশ বলছে, সমকাম বিষয়ক কারণে তিন সন্তানের বাবা রাম স্বরূপের থেকে তার পরিবার আলাদা হয়ে যায় ২ বছর আগে। পুলিশ জানিয়েছে,'তার মেডিক্যাল পরীক্ষায় দেখা হবে, সে এইচআইভি আক্রান্ত কিনা।' উল্লেখ্য, কিরতারপুরে এক খুনের সূত্র ধরে রাম স্বরূপকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে সে জেরায় ১৮ মাসে ১১ জনের খুনের বিষয়ে জানায় বলে খবর।