রামনবমীর দিনে নয়া পাম্বান সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শ্রীলঙ্কা থেকে ফিরেই পাম্বানের সড়ক সেতুর উপরে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী সবুজ পতাকা দেখান। আর তারপরই সবুজ পতাকা দেখিয়ে হর্ন দিতে-দিতে নয়া পাম্বান সেতুতে ‘পা’ ফেলে রামেশ্বরম-তাম্বরম এক্সপ্রেস। ইতিহাস গড়ে পেরিয়ে যায় পাম্বান সেতু। যা ভারতের সমুদ্রে অবস্থিত ভারতের প্রথম উল্লম্বভাবে উত্তোলিত রেলসেতু (ভার্টিকাল লিফট রেলওয়ে সি ব্রিজ)। শুধু তাই নয়, পুরো বিশ্বের কাছে সেই ব্রিজটা ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রতীক হয়ে গেল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোল্ডেন গেট ব্রিজ, লন্ডনের টাওয়ার ব্রিজ, ডেনমার্ক-সুইডেনের ওরেসুন্ড ব্রিজ যেমন ইঞ্জিনিয়ারিং শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে; ঠিক সেরকমই নয়া পাম্বান ব্রিজ ভারতের ‘আইকন’ হয়ে উঠল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
১৯১৪ সাল থেকে ২০২৫ সাল- নয়া ইতিহাস তৈরি
আর সেই নয়া পাম্বান ব্রিজ তৈরির প্রস্তাবে ২০১৯ সালে অনুমোদন দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। রামেশ্বরমের সঙ্গে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সংযোগের জন্য ১৯১৪ সালে যে পাম্বান সেতু গড়ে তোলা হয়েছিল, সেটা বয়সের ভারে ন্যূব্জ হয়ে যাওয়ায় নয়া ব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। সেইমতো চলতে থাকে কাজ।
অবশেষে আজ ২.০৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতু উদ্বোধন করা হল। তার ফলে আরও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও ভালো হবে এবং আরও দ্রুত জাহাজ চলাচল করতে পারবে। রেলের তরফে দাবি করা হয়েছে, নয়া ব্রিজের মাঝবরাবর ৭২.৫ মিটার লম্বা উলম্ব অংশ রয়েছে (৬৪০ টন ওজন), তা ১৭ মিটার উঠে যাবে। আর জাহাজ সহজে চলাচল করতে পারবে। পুরনো ব্রিজের তুলনায় অনেকটা কম সময় সেটা হবে। ফলে ট্রেন চলাচল আরও সহজ হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
১৬০ কিমি বেগেও ট্রেন ছুটতে পারবে, তবে চলবে ৮০ কিমিতে
শুধু তাই নয়, নয়া পাম্বান সেতু দিয়ে ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার বেগেও ট্রেন ছুটতে পারবে। যদিও অত গতিতে ট্রেন ছোটানো হবে না। নয়া পাম্বান সেতুর দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডের (আরভিএনএল) ডিরেক্টর (অপারেশনস) এমপি সিং জানিয়েছেন, ওই সেতু দিয়ে সুরক্ষিতভাবেই ঘণ্টায় ১৬০ কিমি বেগে ট্রেন চালানো যাবে। কিন্তু রামেশ্বরমের দিকে যে বাঁক আছে, সেটার কারণে ঘণ্টায় ৮০ কিমি বেগে ট্রেন চালানো হবে বলে ঠিক করা হয়েছে।
৩৮ বছর রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে না জঙের জন্য
নয়া ব্রিজের সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ের দেখভালের জন্য গঠিত কমিটির অন্যতম সদস্য আরও জানিয়েছেন, ১০০ বছর ধরে ঘণ্টায় ৮০ কিমি বেগে ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে সক্ষম নয়া পাম্বান সেতু। আর গত জানুয়ারিতে দক্ষিণ রেলওয়ের তরফে যে নথি প্রকাশ করা হয়েছিল, তাতে দাবি করা হয়েছিল যে নয়া পাম্বান সেতুতে জং-বিরোধী যে ব্যবস্থা আছে, ৩৮ বছর কোনওরকম রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হবে। আর ৫৮ বছর ন্যূনতম রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।