এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটে মোবাইল ফোন উৎপাদন সংক্রান্ত একাধিক উপাদানের উপর থেকে আমদানি শুল্ক প্রত্য়াহারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। শনিবার লোকসভায় বাজেট বক্তৃতা পেশ করার সময় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এমন একাধিক ঘোষণা করেছেন, যা থেকে এটা স্পষ্ট যে মোবাইল বা স্মার্টফোন উৎপাদনের বিষয়ে 'মেক ইন ইন্ডিয়া' নীতিতেই গুরুত্ব আরোপ করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সূত্রের দাবি, এদিন বাজেটে এই সংক্রান্ত যে প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে, তা কার্যকর করতে পারলে স্য়ামসাং, অ্য়াপল এবং শিয়াওমি-র মতো বিদেশি সংস্থাগুলির মোবাইল বা স্মার্টফোন ভারতেই আরও বেশি সংখ্য়ায় উৎপাদিত হবে।
উল্লেখ্য, গত ছ'বছরে ভারতের বৈদ্যুতিন উৎপাদন ক্ষেত্রের ব্যাপক বৃদ্ধি ও বিস্তার ঘটেছে। উল্লেখিত সময়ের মধ্য়ে যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গত বছর ১১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছে গিয়েছে। যার ফলে বর্তমানে ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ও স্মার্টফোন উৎপাদনকারী দেশে উন্নীত হয়েছে।
তথ্য বলছে, এই মুহূর্তে ভারতের স্মার্টফোন উৎপাদন ক্ষেত্রে রাজত্ব করছে অ্য়াপল। বাজারে তাদের রেভিনিউ শেয়ারের (আয়ের নিরিখে অংশীদারিত্ব) পরিমাণ ২৩ শতাংশ। তালিকায় ২ নম্বরে রয়েছে স্য়ামসাং - তাদের রেভিনিউ শেয়ার ২২ শতাংশ।
এত দিন ভারতের স্মার্টফোন উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলি আমদানি করতে হলে ২.৫ শতাংশ হারে শুল্ক দিতে হত। এই উপাদানগুলির মধ্যে রয়েছে - প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড অ্য়াসেম্বলিস, ক্যামেরা মডিউলের নানা অংশ, ইউএসবি কেবল প্রভৃতি।
সংশ্লিষ্ট উপাদানগুলির উপর থেকে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে নেওয়া হলে আন্তর্জাতিক বাজারে ভারত নিজের জায়গা আরও মজবুত করতে পারবে।
সূত্রের দাবি, ভারত যদি এভাবে বিশ্ববাজারে নিজের প্রভাব কায়েম করতে না পারে, তাহলে স্মার্টফোন নির্মাণের প্রশ্নে চিন এবং ভিয়েতনামের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে পারে।
বলা হচ্ছে, এই বিষয়ে নাকি প্রযুক্তি মন্ত্রক নির্মলা সীতারামনের অর্থ মন্ত্রককে সচেতন ও সতর্ক করেছিল। মনে করা হচ্ছে, তার জেরেই এবারের বাজেটে সংশ্লিষ্ট উপাদানগুলির উপর থেকে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
উৎপাদন ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান মজবুত করতে আগেই উদ্যোগ শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। যে কারণে গত বছরের বাজেটেও এই ধরনের শুল্কগুলি নিয়ে পর্যালোচনা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। বাণিজ্য সহজ করতে পুরো বিষয়টিকে আরও সহজ সরল করার কথা বলা হয়েছিল।
সেই পর্যালোচনার ফলেই এবারের বাজেটে সেইসব উপাদান বা কাঁচামালগুলির উপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেওয়া হল, যেগুলির দাম 'ফাইনাল প্রোডাক্ট'-এর থেকেও বেশি পড়ে যেতে পারে।