সদ্য প্রশিক্ষণ শেষ করেছিলেন। প্রথম পোস্টিংও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, কাজে যোগ দেওয়া আর হল না। তার আগেই প্রাণ কাড়ল পথ দুর্ঘটনা। রবিবারের ওই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় যাঁর মৃত্যু হয়েছে, তিনি ২৬ বছরের এক ঝকঝকে তরুণ আইপিস - হর্ষ বর্ধন।
মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা হর্ষ বর্ধন ২০২৩-এর ব্যাচের কর্ণাটক ক্যাডার ছিলেন। কর্মজীবনে তাঁর প্রথম পোস্টিং হয়েছিল কর্ণাটকেরই হাসান জেলায়। সেই চাকরিতে যোগ দিতে যাওয়ার পথে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনায় চিরকালের মতো হারিয়ে গেলেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে যে দাবি করা হচ্ছে, তা যথেষ্ট গুরুতর। বলা হচ্ছে - পুলিশের গাড়িতেই কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন হর্ষ বর্ধন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন পুলিশেরই এক কর্মী।
হঠাৎই মাঝপথে তাঁদের গাড়ির একটি চাকা ফেটে যায় এবং তার ফলে চালক তাঁর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। যার জেরে ওই গাড়িটি প্রথমে রাস্তার ধারের একটি বাড়ি এবং তারপর একটি গাছে ধাক্কা মেরে থেমে যায়।
তথ্য বলছে, এই ঘটনায় গাড়ির চালক খুবই সামান্য আঘাত পান। কিন্তু, হর্ষ বর্ধনের মাথায় গুরুতর চোট লাগে। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসা চলাকালীন সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই প্রবল ছিল যে হর্ষ বর্ধন যে গাড়িতে যাচ্ছিলেন, সেটি একেবারে দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। তিনি হর্ষ বর্ধনের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, 'এত বছরের কঠোর পরিশ্রম! যে মুহূর্তে তার সুফল আসার সময় হল, ঠিক তখনই এমন ঘটনা ঘটে গেল। এটা একেবারেই ঘটা উচিত ছিল না।'
তিনি আরও লেখেন, 'কিট্টানে সীমানার কাছে হাসান-মহীশূর হাইওয়ের উপর এই দুর্ঘটনায় প্রবিশনারি আইপিএস হর্ষ বর্ধনের মত্যুর খবর শুনে আমি মর্মাহত। তিনি তাঁর প্রথম তাঁর দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছিলেন। তার ঠিক আগে এমন ঘটনা ঘটা অত্যন্ত বেদনার। যে মুহূর্তে এত বছরের কঠোর পরিশ্রমের সুফল আসার সময় হল, ঠিক তখনই এমন ঘটনা ঘটা মোটেও ঠিক হল না।...'
'...ঈশ্বরের কাছে আমার প্রার্থনা, তিনি যেন হর্ষ বর্ধনের আত্মাকে শান্তি দেন। তাঁর পরিবারের প্রতি আমি সমবেদনা জানাচ্ছি।' এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাকে 'ট্র্যাজিক লস' বলেও উল্লেখ করেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী।
লোকসভার প্রাক্তন সদস্য সদানন্দ গৌড়া লেখেন, ‘ভারত একজন উদীয়মান কর্মনিষ্ট তরুণ আধিকারিককে হারিয়ে ফেলল।’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হোলেনারাসিপুরের অ্যাসিসট্যান্ট পুলিশ সুপার পদে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন হর্ষ বর্ধন। সম্প্রতি মহীশূরের কর্ণাটক পুলিশ অ্যাকাডেমি থেকে তিনি তাঁর চার সপ্তাহের প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করেছিলেন।